ডিসেম্বরে পুরভোট, জোর প্রস্তুতি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের
তিনটি পুরসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বড়দিনের আগেই কলকাতা, হাওড়া এবং বিধাননগরে পুরভোট করাতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। তবে প্রকাশ্যে নির্বাচন কমিশন বা রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি এ কথা স্বীকার করেননি। কিন্তু উৎসবের মরসুম কেটে গেলেই যে ভোট হতে পারে, তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ের পর তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যের পুরসভা ভোটগুলি দ্রুত করানোর চেষ্টা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এমন ইঙ্গিত পেয়ে নিজেদের মতো ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ১২ কিংবা ১৯ ডিসেম্বর তিন পুরসভার ভোট হতে পারে। নির্বাচন কমিশন চাইছে বড়দিনের ছুটির আগেই এই তিন পুরসভার ভোট শেষ করে ফেলতে। তাতে দীর্ঘদিন ধরে বাকি থাকা পুরভোটের একটি পর্যায়ের কাজ শেষ করা যাবে। একই সঙ্গে বাকি পুরসভাগুলির ভোট-প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যাবে।
সূত্রের খবর, ছটপুজো মিটে গেলে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে কমিশনের তরফে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে যাবতীয় প্রস্তুতি আটকে যায়। পিছিয়ে যায় পুরভোটও। কিন্তু ওই সময়ে আসন পুনর্বিন্যাস-সহ পুরভোটের প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে গিয়েছিল। তাই কমিশন সূত্রে খবর, এ বারের ভোট প্রস্তুতিতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না তাদের। নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ গত বছর মার্চ মাসেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভোট পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা আর সে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। কিন্তু ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ভোট ধরে আমরা আবার প্রস্তুতি শুরু করেছি। তবে ভোটের ক্ষেত্রে এমন কিছু কাজ থাকে যা, ভোট ঘোষণা না হলে শুরু করা যায় না। তাই ভোট ঘোষণা হলেই সেই সংক্রান্ত কাজ শুরু হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যেহেতু কলকাতা, হাওড়া, বিধাননগরে ভোট হবে। তাই খুব বেশি চাপ আমাদের উপর পড়বে বলে মনে হয় না। বাকি পুরসভার ভোট আগামী বছর করা হবে বলেই মনে করছি।’’
উল্লেখ্য, কলকাতায় ভোট বাকি রয়েছে প্রায় দেড় বছর। ২০২০ সালের মে মাস থেকে পুর প্রশাসকের অধীনে রয়েছে। হাওড়া পুরসভা আবার ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বিধাননগরে ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে রয়েছে পুর প্রশাসকের অধীনে। আপাতত এই তিন পুরসভায় ভোট করিয়ে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে কী ভাবে ভোট করানো সম্ভব, তা যাচাই করে নিতে চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।