দাবি না মেটা পর্যন্ত সরব না, কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরব টিকায়েত
ক্রমশ বাড়ছে মোদী বিরোধী আন্দোলনের তেজ। কেন্দ্রের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ অবস্থানে শামিল হলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। পাশাপাশি সব জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আর্জি জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বললেন, ‘লখিমপুর কাণ্ডে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করে তাঁকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিন।’ এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) সর্বভারতীয় নেতা রাকেশ টিকায়েত কেন্দ্রীয় সরকারকে ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘কৃষি আইন বাতিল হলে তবেই দিল্লির সীমানা ছেড়ে নড়বেন কৃষকরা। কৃষি আইন যেমন বাতিল করতে হবে, তেমনই ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে আইনও কার্যকর করতে হবে। কেন্দ্র যত বেশি কৃষকদের এড়িয়ে চলবে, দিল্লির সীমানার পাশাপাশি সারা দেশেই কিষান আন্দোলন তত শক্তিশালী হবে।’ অন্যদিকে, কিষান-মার্চের স্মৃতি ফিরিয়ে আজ, বুধবার মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে মিছিল শুরু করবেন কৃষকরা। সবমিলিয়ে কৃষক আন্দোলন ইস্যুতে ক্রমশই কোণঠাসা হচ্ছে গেরুয়া শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল।
রাষ্ট্রপতির কাছে সমস্ত জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকের মাধ্যমে যে চিঠি পাঠিয়েছেন কৃষকরা, সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির গ্রেপ্তারি এবং বরখাস্তের ব্যাপারে হস্তক্ষেপের আর্জি ছাড়াও আবেদন জানানো হয়েছে যে, ‘সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে লখিমপুর কাণ্ডের তদন্ত করুক বিশেষ তদন্তকারী দল।’ এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চা অভিযোগ করেছে, ‘যুক্তিতে না পেরে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কৃষক আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এরই প্রতিবাদে দেশ জুড়ে গর্জে উঠেছেন কৃষকরা।’ মোর্চা জানিয়েছে, ‘দিল্লির সীমানায় কৃষক আন্দোলনের ১১ মাস পূর্তিতে সারা দেশের শতাধিক স্থানে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন কৃষকরা। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, বিহার, রাজস্থান, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। ধর্না অবস্থান ছাড়াও হয়েছে বাইক মিছিল, পদযাত্রা। মিরাটে ট্রাক্টর মিছিল করে কালেক্টর অফিসে গিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন আন্দোলনকারীরা।’ সংযুক্ত কিষান মোর্চার অভিযোগ, লখিমপুর কাণ্ডে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁর সঙ্গে খুনে অভিযুক্তর মতো ব্যবহারই করছে না পুলিস। বরং ডেঙ্গি হয়েছে, এই সন্দেহে তাঁকে জেলের বাইরে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
বাগপতে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিংকে কালো পতাকা দেখিয়েছেন কৃষকরা। সিরসায় একটি অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল হরিয়ানার দুই মন্ত্রী সন্দীপ সিং এবং জেপি দালালের। মূল প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেন কৃষকরা। যার ফলে পুরো অনুষ্ঠানটিই বিজেপিকে বাতিল করতে হয় বলে দাবি করেছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। পাশাপাশি, সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘আজ, বুধবার লখিমপুর খেরি শহিদ কলস যাত্রা পুনে থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর মুম্বই পৌঁঁছবে। কার্যত পুরো মহারাষ্ট্র জুড়েই এই যাত্রা চলবে।’ অন্যদিকে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, কৃষকরা সার পাচ্ছেন না। সরকার এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে যাতে, গরিব চাষিরা বেশি দাম দিয়ে বেসরকারিভাবে সার কিনতে বাধ্য হন। এবং তিন কৃষি আইন কার্যকর করতে মোদী সরকারের সুবিধে হয়।