করোনায় মা-বাবা হারানো শিশু ও নাবালকদের দেখভাল করবে ‘স্নেহছায়া’
করোনায় বাবা অথবা মা এবং একই সঙ্গে দু’জনকে হারানো শিশু ও নাবালকদের দেখভাল করবে ‘স্নেহছায়া’। শিশুটির শারীরিক অবস্থা, পড়াশোনা করছে কি না, কোনও আর্থিক সমস্যায় পড়েছে কি না সব তথ্যই পাওয়া যাবে রাজ্য সরকারের এই বিশেষ অ্যাপে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ৬ হাজার ৭৭৩টি এমন অপ্রাপ্তবয়স্কদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের তথ্য থাকছে এই অ্যাপে। মূলত এটি একটি নজরদারি বা মনিটারিং অ্যাপ। যাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী থেকে সর্বস্তরের আধিকারিকরা নজরদারি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন। বুধবার আসানসোলে এই অ্যাপের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন রাজ্যের নারী, শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নতুন এই অ্যাপ। অ্যাপের মাধ্যমেই মহামারীতে অনাথ হওয়া অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর নজর রাখতে পারব। তাদের কোনও সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে এমন শিশু ও নাবালকদের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। এবার তাদের বাড়তি দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তারা যেন অসহায় বোধ না করে, তারজন্য নজরদারিতে থাকছে মনিটারিং অ্যাপ। এদিন পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় এই অ্যাপের পরীক্ষামূলক সূচনা হল। পরবর্তী ক্ষেত্রে বাকি জেলাতেও তা চালু হয়ে যাবে। জানা গিয়েছে, দপ্তরের নিচুতলার কর্মী ও আধিকারিকরা এইসব শিশুর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে অ্যাপে যাবতীয় তথ্য আপলোড করবেন। বিষয়টি দেখাশোনা করবেন ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা।
এদিনের অনুষ্ঠানে অ্যাপের সূচনার পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান ও কালিম্পং জেলায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডেরও উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন কালিম্পং-এর জেলাশাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। রাজ্যে নতুন ২৮৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শুভ সূচনা হয় এদিনই। মন্ত্রী বলেন, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই নতুন করে দু’টি জেলায় এটি চালু হওয়ায় অনেকটাই সুবিধা হবে। শিশুদের মানসিকতা পরিবর্তনে এর গুরুত্ব রয়েছে। স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি ও কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হচ্ছে ১৬ নভেম্বর। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পঠনপাঠন শুরু করার নির্দেশ এলে তারাও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা মন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি, আসানসোল পুরসভার প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ সহ বিশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।