দলীয় মুখপাত্র জাগো বাংলায় কংগ্রেসের কুৎসার জবাব, অবস্থান স্পষ্ট তৃণমূলের
কংগ্রেস চলছে ঢিমেতালে। সেই তালে তাল মেলাতে গিয়ে নিজের যাত্রাভঙ্গ করবে না তৃণমূল। জোটের দরজা খোলা, কিন্তু তা যতক্ষণ না হচ্ছে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না ঘাসফুল শিবির। ভিনরাজ্যে শক্তি বাড়ানোর কাজে তৃণমূলের তৎপরতা বহাল থাকবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফরের দিনে এভাবেই দলীয় মুখপাত্র জাগো বাংলায় (Jago Bangla on Anti BJP Alliance and TMC) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল।
জাগো বাংলা সম্পাদকীয়তে আজ লেখা হয়েছ, “ট্যুইটেই সীমাবদ্ধ কংগ্রেস। জোট তৈরির কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। ২০১৪,২০১৯ লোকসভায় কংগ্রেস ডুবিয়েছে। কংগ্রেস নিজেদের সমস্যায় জেরবার। রাজপথে নেই, লাগাতার আন্দোলনে নেই। বিজেপিকে কী ভাবে হারাতে হয় তা আমরা দেখিয়েছি। আমরা কি ওদের জন্যে বসে থাকব?” এর পরেই তৃণমূলের নিদান, “কংগ্রেসের ভরসায় বসে থাকা যাবে না। শক্তি বাড়াতেই থাকব আমরা।”
প্রশ্ন হল অবস্থান ব্যখ্যা করার জন্য ঠিক এই সময়টাকেই বেছে নিল তৃণমূল! রাজনৈতিক মহল বলছে বিজেপির দুর্গের উপর নজর রয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূল দুই শিবিরেরই। আর এই কারণে গোয়ায় লড়াইটা কার্যত তিনমেরুর। এই কারণে বিজেপি-কংগ্রেস একযোগে তৃণমূলকে গোয়ার রাজনৈতিক পর্যটক বলছে।
এদিকে এত দিন নরমে-গরমে বারবার নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে এসেছে তৃণমূল। পাল্টা তৃণমূলকে চূড়ান্ত আক্রমণ করেছেন অধীর চৌধুরীর মতো কংগ্রেস নেতারাও। অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কেন বলছেন না আমি কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা করেছি?’ অধীর এমনও বলেছেন, “মমতা ব্যানার্জিকে খুব স্নেহের চোখে দেখে গান্ধী পরিবার। মমতার প্রতি কংগ্রেসের তাবড় নেতাদের খুব ভালো ধারণা রয়েছে। আমার উপর বাংলায় অত্যাচার হয় এতদিন তা দিল্লির নেতারা বিশ্বাস করত না। আদর্শ নারী হিসেবে মমতাকে দিল্লির নেতারা দেখেন। এখন মমতার কীর্তিকলাপ দেখে তারা অবাক হয়ে যাচ্ছেন”।
এমন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের খেলা চলছিলই। অভিষেক এক রাজনৈতিক জনসভায় বলেছিলেন, তৃণমূল এবং কংগ্রেসের পার্থক্য এই যে, দুটি দলই বিজেপি বিরোধী। কংগ্রেস-বিজেপির কাছে হারে আর তৃণমূল বিজেপিকে হারায়।
অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। তাঁর বক্তব্য শুনতে দিল্লিতে হাজির হয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা। এই কখনও সখ্য কখনও বৈরিতার আসল কারণটা কী! পূর্বাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের কমফোর্ট জোন ছেড়ে তৃণমূল নেত্রী যখন নতুন রণাঙ্গনে পা রাখছেন, তখনই তা স্পষ্ট করে দিতে চাইছে তৃণমূল। দলভাঙানোর অভিযোগের বিরুদ্ধে তৃণমূল জানাচ্ছে, দল ভাঙানো নয়, তাদের অভিপ্রায় শক্তিসঞ্চয়। তৃণমূল বলতে চাইছে, এখনও জোটের দরজা খোলা রাখছে তারা। তবে কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ সমস্যাদীর্ণ পরিস্থিতিতে হাতগুটিয়ে বসে না থেকে বিজেপির বিপ্রতীপ শক্তি হিসেবে নিজেদের আরও শক্তিশালী করবে তৃণমূল।