মমতার উদ্যোগে ফের কমছে আলুর দাম
মাঝে কয়েকদিনের জন্য দাম চড়েছিল। ফের বাজারে আলুর দাম কমতে শুরু করেছে। আলুর দাম কমে যাওয়ার পিছনে রাজ্য সরকারের দুটি সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভিন রাজ্যে বা বিদেশে আলু পাঠালে পরিবহণ খাতে যে ভর্তুকি প্রদান চালু করা হয়েছিল তা পয়লা নভেম্বর থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর ভর্তুকি দেওয়ার যে নির্দেশিকা কৃষি বিপণন দপ্তর জারি করেছিল তাতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এটা চলার কথা ছিল। প্রত্যাহারের নির্দেশিকাতেও উল্লেখ করা হয়েছে, ভর্তুকি দেওয়ার পর প্রচুর পরিমাণ মজুত আলু বের হয়েছে। খুচরো ও পাইকারি বাজারে আলুর দামও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত থাকলে তা আলুর ক্রেতাদের ক্ষতি করতে পারে।
কৃষি বিপণন দপ্তর আরও একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হিমঘরে মজুত সব আলু বের করে ফেলতে হবে। এই নির্দেশ অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হিমঘরে আলু রাখার নির্ধারিত সময় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থাকে। অতীতে বেশ কয়েকবার এই সময়সীমা ১৫ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার। এবার ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় রেখে দেওয়ায় বাজারে আলুর জোগান বাড়বে। কয়েকদিন আগে খুচরো বাজারে জ্যোতি আলুর দাম কেজিতে ২০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সব্জির পাশপাশি আলুর দাম ফের বাড়তে শুরু করল কি না তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে ফের দাম কমে গিয়েছে। খুচরো বাজারে জ্যোতি আলুর দাম ১৭-১৮ টাকায় নেমে এসেছে। হিমঘর থেকে বের হওয়ার পর স্থানীয় পাইকারি বাজারে আলুর দাম ১৭ টাকায় পৌঁছেছিল। তা এখন ১৩ টাকার আশপাশে। প্রতি ৫০ কেজি আলুর বস্তার বন্ড ৫৫০-৬০০ টাকায় উঠেছিল। তা এখন ৩৫০-৪০০ টাকায় নেমে এসেছে।
এবার রাজ্যে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে হিমঘরগুলিতে প্রায় ৭২ লক্ষ টন আলু মজুত হয়েছিল। এখনও হিমঘরে প্রায় ২৩ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। এই সময় বীজের জন্য প্রচুর পরিমাণে মজুত আলু বেরয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুরো মজুত আলু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বের করা খুব কঠিন বলে মনে করছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আলু হিমঘরে রাখার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারকে তাঁরা অনুরোধ করবেন। যে পরিমাণ আলু এখনও মজুত আছে তার জন্য পরিবহণ ভর্তুকি অব্যাহত রাখতেও অনুরোধ করা হবে। এটা না-হলে ব্যবসায়ী ছাড়াও আলু চাষিদের একটা বড় অংশ সঙ্কটে পড়বেন। কারণ হিমঘরে এখনও চাষিদের রাখা আলু রয়েছে। ব্যাপক ফলনের জন্য এবার হিমঘরে আলু রেখেও লাভ হয়নি বলে সংগঠনের দাবি।