লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় কালীপুজো সম্পন্ন হল মুর্শিদাবাদে
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় পুজো হল কালীর। প্রায় দশ বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর আবার গ্রামে কালীপুজো হওয়ায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় মহিলাদের, যাঁরা সরকারি অনুদানের টাকার একটা অংশ তুলে দিয়েছেন পুজোর জন্য।
বহরমপুর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ভরতপুর থানার অন্তর্গত আলুগ্রামপঞ্চায়েত। সেখানকার মাসলা গ্রামে প্রায় শ’দেড়েক পরিবারের বাস। এ গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না। সে জন্য পুজোর চারদিন আনন্দ করতে যেতে হয় পাশের সালুগ্রামে। বহু বছর আগে গ্রামের ভিতর কালীপুজো হত। কার্তিকী অমাবস্যায় আনন্দ করত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। সে সব দিনের স্মৃতি আজও অমলিন। কিন্তু অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই একমাত্র কালীপুজোটিও, বছর দশেক হল।
এ বছর রাজ্য সরকারি প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে -এ প্রতিমাসে ৫০০ করে টাকা পাচ্ছেন মহিলারা। সেই টাকা থেকেই কিছুটা তাঁরা তুলে দিলেন পুজো কমিটির হাতে। নতুন করে শুরু হল পুজো। স্থানীয় বাসিন্দা মমতা নন্দী বলেন, ‘আমরা এ মাসে পাওয়া টাকা থেকে ৪০০ টাকা তুলে দিয়েছিল পুজোর জন্য। আর ১০০ টাকা রেখেছি বাড়ি ছেলেমেয়েদের আনন্দের জন্য। ওরা একটু সাজবে, ভালমন্দ খাবে, আনন্দ করবে। এ টুকুই তো আমাদের চাওয়া।’ স্থানীয় বাসিন্দা ও পুজো কমিটির সদস্য সমীর নন্দী বলেন, ‘কারও কাছ থেকে জোর করে টাকা চাওয়া হয়নি। যাঁর ইচ্ছে হয়েছে তিনিই দিয়েছেন। তা দিয়েই আজ গোটা গ্রামে আনন্দের পরিবেশ।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০ জন মহিলা ৪০০ টাকা করে দিয়েছেন পুজোর জন্য। এ ছাড়া, আরও কিছু কিছু সাহায্য এসেছে গ্রামের বাসিন্দাদের তরফে। আর তাতেই ঝলমলিয়ে উঠেছে গ্রাম। লাগানো হয়েছে রঙিন আলো। ছোট মণ্ডপে শ্যামা প্রতিমা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সাজ সাজ রব। বাড়ির মহিলারাই হাত লাগিয়েছিলেন পুজোর আয়োজনে। কেউ ফল কেটেছেন, কেউ প্রদীপ সাজিয়েছেন, কেউ জোগাড় করেছেন ফুল-মালা। সন্ধে হতেই পুজোর জামা পরে মণ্ডপে হাজির হয়েছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। কারও পরনে প্রথম শাড়ি।
স্থানীয় বাসিন্দা পার্বতী নন্দী বলেন, ‘আমাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। এ ভাবে যেন আগামী দিনেও আমাদের সমৃদ্ধি বজায় থাকে। আগামী বছরেও আমরা পুজো করতে চাই।’