নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল্লিতে দেদার ফাটল শব্দবাজি
নিষেধাজ্ঞা জারি করেও কাজ হল না। প্রায় ২০ হাজার কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত এবং গত এক সপ্তাহে ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেও ঠেকানো গেল না। দীপাবলিতে গভীর রাত পর্যন্ত দিল্লিতে দেদার ফাটল শব্দবাজি (Sound Cracker)। তৈরি হল ধোঁয়া। যার জেরে সত্যি হল আশঙ্কা। শুক্রবার প্রায় সারাদিন রাজধানীর (Delhi) আকাশ ছিল একপ্রকার অদৃশ্য। ধূসর শামিয়ানায় ঢেকেছিল চারিদিক। বায়ুর মান ‘বিপজ্জনক’ বলেই জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আচমকা হাওয়া না চললে আগামী তিন-চারদিনেও পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই বলেই জানাল কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কি না, শ্বাস সমস্যায় আক্রান্তদের শরীরে বাড়তি অসুবিধার কথা ভেবে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
যদিও দিল্লিতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এভাবে বাজি ফাটানোর পিছনে বিরোধীদের অভিসন্ধিই কাজ করছে বলেই অভিযোগ করেছেন কেজরিওয়াল সরকারের পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই। বলেছেন, দিল্লির বেশিরভাগ বাসিন্দাই বাজি ফাটাননি। তাঁদের ধন্যবাদ। তবে কিছু মানুষ বাজি ফাটিয়েছে, পরিবেশ নষ্ট করেছে। বিজেপির একাংশ থেকেই এভাবে বাজি ফাটাতে উস্কানি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে, দিল্লি পুলিস জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাজি ফাটানোয় ২১০টি এফআইআর করা হয়েছে। স্রেফ দীপাবলির রাতেই বাজি ফাটানোর জন্য ১৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিসেরও আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বলেই ওয়াকিবহাল মহলের মত। কারণ, আদতে দূষণের দাপটে ভুগতে হচ্ছে দিল্লিবাসীকেই। গলা খুশখুশ, কাশি, শ্বাস সমস্যা সহ কারও কারও চোখ জ্বালার মতো সমস্যা তৈরি হয়েছে।
বাজির জেরেই তা হয়েছে বলেই শুক্রবার জানিয়েছেন ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীন ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ আর কে জেনামনি। তিনি বলেন, বাজি ফাটানোর জন্যই দূষণের ধূসর চাদরে ঢেকে গিয়েছে দিল্লি। হাওয়া না চললে আগামী তিনচারদিনের আগে পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়া কঠিন। রাজধানী দিল্লি সহ এনসিআর (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন) এলাকায় দীপাবলীর পরের দিন শুক্রবার গড় বায়ু মান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল ৪৬২। অথচ দীপাবলির দিন তা ছিল ৩৮২। বাজি ফাটানোর ফলেই যে দূষণ, তা বলাই বাহুল্য। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়েছে, পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের যা ছিল (৪৪৫) চেয়েও দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। কারণ, কোভিড এখনও যায়নি। তারই মধ্যে এই দূষণ, বাড়তি বিপদের ঝুঁকি।