রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ফের বঞ্চনা, কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার ২০দিন পরেও বাড়ানো হল না বাংলার শ্রমদিবস

November 7, 2021 | 2 min read

চলতি আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজে শ্রমদিবস তৈরিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ২২ কোটির যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল, তা অক্টোবরেই অতিক্রম করে গিয়েছে বাংলা। লেবার বাজেট নিয়ে তার আগেই দিল্লির অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের অফিসারদের। রাজ্য দফায় দফায় চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু তারপর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ‘লেবার বাজেট’ বা শ্রমদিবস বাড়ানো হয়নি। এমনকী, এক টাকাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এটা বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয় বলেই মনে করছেন রাজ্যের অফিসাররা।

গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম হল ১০০ দিনের কাজ। যার মাধ্যমে গরিব মানুষ প্রতিদিন ২০২ টাকা আয় করতে পারেন। এখনও পর্যন্ত ৯১ লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষ এই কাজে যুক্ত। শনিবার পর্যন্ত এই কাজে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ১৯৭ কোটি ৪ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। যা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কী করে এত খরচ, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। তাদের অফিসাররা দফায় দফায় রাজ্যে এই কাজে ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা। সেই মতোই ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু শ্রমদিবস না বাড়ালে কাজ চালাতে অসুবিধা হবে বলে মনে করছেন রাজ্যের অফিসাররা।

সুব্রত মুখোপাধ্যায় ২০১২ সালে পঞ্চায়েত দপ্তরের দায়িত্ব নেওয়ার পর গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট ২০০৫ (এমজিনারেগা) অর্থাৎ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে বাংলার গরিব মানুষ যাতে রোজগার করতে পারে। সেই মতো এই প্রকল্পে রাস্তা তৈরি করা, পুকুর কাটা, সেচ খাল তৈরি, গাছ লাগানো, পাঁচিল তৈরির কাজে শ্রমিকদের যুক্ত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কাজকে আরও বিস্তৃত করতে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকা পুনর্গঠনে ১০০ দিনের কাজে যুক্ত শ্রমিকদের ব্যবহার করেন। আরও বেশি মানুষ কাজ পান। এর ফলে এই প্রকল্পে যুক্ত মানুষের আয় আগের থেকে বেড়েছে।

এই প্রকল্পে বাংলা বরাবর প্রথম স্থান অর্জন করেছে। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অফিসারদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলায় কী করে এত কাজ হচ্ছে, এত টাকা খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে
তারা। তাদের প্রশ্ন, ১০০ দিনের কাজে জব কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং কাজের বণ্টনে স্বচ্ছতা রয়েছে কি? এ সবই খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসাররা। তাঁরা কেনাকাটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের অফিসারদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই মতো ব্যবস্থা নিচ্ছেন রাজ্যের অফিসাররা। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের মতে, এই প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যেতে অবিলম্বে লেবার বাজেট বা শ্রমদিবস বাড়ানো দরকার। যেমন গত বছর বাড়ানো হয়েছিল।

গত আর্থিক বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৪১ কোটি ৪১ লক্ষ ৩৯ হাজার। বর্তমান আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসেই ২২ কোটির লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্য। শনিবার পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৩৩ লক্ষ ৯৫ হাজার। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে এবার পঞ্চায়েত দপ্তরের দায়িত্ব মন্ত্রিসভার যে সদস্যের উপর বর্তাবে, শ্রমদিবস বৃদ্ধি এবং টাকা বরাদ্দের জন্য দরবার করাই তাঁর প্রথম কাজ হয়ে দাঁড়াবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Narendra Modi, #Labour Day

আরো দেখুন