দেশ বিভাগে ফিরে যান

আরিয়ানকে অপহরণের জন্যেই ক্রুজ পার্টি, বিস্ফোরক মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী

November 8, 2021 | 2 min read

শাহরুখ-পুত্রের জামিনের দিন তাঁর হুঙ্কার ছিল, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়।’ তার দিন দু’য়েক পর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘দীপাবলি কাটতে দিন। বোমা ফাটাব।’ মাদককাণ্ডে শেষমেশ রবিবার সেই বোমা ফাটালেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। চাঁচাছোলা ভাষায় বললেন, ‘আরিয়ান খানকে অপরহণ করে মুক্তিপণ আদায় করতেই প্রমোদতরীতে পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। পরিকল্পনার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মুম্বইয়ে বিজেপির যুব সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি মোহিত ভারতীয়। আর তাঁকে সঙ্গ দিয়েছিলেন নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে।’ নবাবের সুরে সুর মিলিয়ে আরিয়ানকে ফাঁসানো এবং বিপুল টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেছেন এই মামলার আর এক সাক্ষী বিজয় পাগাড়েও। আগে একই কথা জানিয়েছিলেন অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সাইল।

প্রথম থেকেই গোটা ঘটনাকে সাজানো বলে দাবি করেছিলেন এই এনসিপি নেতা। রবিবার নিজের দাবির সপক্ষে নবাবের যুক্তি, ‘মোহিতের শ্যালক ঋষভ সচদেবকে ব্যবহার করে অপহরণের ফাঁদ পাতা হয়। আরিয়ান নিজে প্রমোদতরীর টিকিট কাটেননি। প্রতীক গাবা ও আমির ফার্নিচারওয়ালা তাঁকে সেখানে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু, শাহরুফ-পুত্র ছাড়া এঁদের কাউকে ধরেনি এনসিবি। কারণ, তাঁকে অপহরণ করে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা ছিল। প্রথমে ২৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। কথাবার্তার পর ১৮ কোটিতে ডিল চূড়ান্ত হয়। তার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা চলেও আসে। কিন্তু, আরিয়ানের সঙ্গে মাদক মামলায় এনসিবির অন্যতম সাক্ষী কেপি গোসাভির একটি সেলফিতেই গোটা ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায়।’ একইসঙ্গে কিং খানের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘ভয় পাবেন না। আপনার সন্তানকে অপহরণ করে যদি কেউ মুক্তিপণ দাবি করে এবং বাবা হিসেবে আপনি টাকা দেন, তাহলে আপনি পরিস্থিতির শিকার। তাই চুপ করে থাকবেন না। অবিচারের বিরুদ্ধে যে লড়াই আমি শুরু করেছি, তাতে সঙ্গ দিন।’ মাদককাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রবিবার আরিয়ানকে ডেকে পাঠিয়েছিল এনসিবি। কিন্তু, জ্বর হওয়ায় তিনি আসেননি বলে জানা গিয়েছে এজেন্সি সূত্রে।

঩কিন্তু গোটা ঘটনায় কীভাবে জড়িয়ে রয়েছেন এনসিবি কর্তা ওয়াংখেড়ে? মন্ত্রীর দাবি, ‘৭ অক্টোবর গভীর রাতে ওয়াংখেড়ে ও মোহিত ওশিওয়াড়া কবরস্থানে দেখা করেছিলেন। কিন্তু, এনসিবি কর্তার ভাগ্য ভালো। তাই ওখানকার কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করছিল না।’ নবাবের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে এনসিবিও। তদন্তকারী সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মৌখিক অভিযোগ না করে নবাব তো আদালতে যেতে পারেন।

কিন্তু মুখ বন্ধ করতে নারাজ নবাব। তাঁর অভিযোগ, ‘শুধু শাহরুখ-পুত্র নয়, প্রমোদতরীর ওই মাদক পার্টিতে ডেকে রাজ্যের মন্ত্রী ও তাঁদের ছেলে-মেয়েদেরও ফাঁসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাই মন্ত্রী আসলাম শেখ ও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের ছেলে-মেয়েদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পার্টির আয়োজক তথা ফ্যাশন টিভির কর্তা ও ওয়াংখেড়ের ঘনিষ্ঠ কাশিফ খান। মাদক পার্টি আয়োজন করলেও তাঁকে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসলাম সেখানে পৌঁছলেই উড়তা মহারাষ্ট্র হয়ে যেত।’

নবাব মালিকের এহেন একের পর এক অভিযোগে পরিবারের সম্মানহানি হচ্ছে বলে বহুবার দাবি করেছে ওয়াংখেড়ের পরিবার। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। তাই এদিন নবাবের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন সমীরের বাবা ধ্যানদেব ওয়াংখেড়ে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Aryan Khan, #drug case, #Nawab Malik

আরো দেখুন