‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’কে সরকারি সাহায্যের আশ্বাস জ্যোতিপ্রিয়র
ইংরাজিতে স্নাতক হয়েও কোনও চাকরি নয়, প্রথা ভাঙা পথে হেঁটে নিজের চায়ের দোকান তৈরি করেছেন হাবড়ার (Habra) তরুণী। দোকানের নাম দিয়েছেন – ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’। এই নামেই তিনি ব্র্যান্ড গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন। মাত্র সপ্তাহখানেক হল হাবড়া স্টেশনে চালু হয়েছে ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’ টুকটুকি দাসের দোকান। ইতিমধ্যেই তাঁর এই উদ্যোগ ভাইরাল। নেটিজেনদের মুখে মুখে তাঁর কথা শোনা যাচ্ছে। নেটপাড়া থেকে বেরিয়ে টুকটুকির খবর পৌঁছেছে সরকারি জনপ্রতিনিধিদের কানেও। রবিবার তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে সাহায্যের আশ্বাস দিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা হাবড়া তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)।
গত সপ্তাহের শুরুর দিন হাবড়া স্টেশনে সপ্তাহের শুরু থেকেই নতুন এক চায়ের দোকান (Tea Stall) চালু হয়েছে। তার নামেই মালকিনের পরিচয় – ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’। মালকিন টুকটুকি দাস ইংরাজিতে এমএ (MA, English)। মা-বাবার কথা মেনে উচ্চশিক্ষার পর হন্যে হয়ে চাকরি না খুঁজে নিজেই তৈরি করেছেন চায়ের দোকান। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত একাই দোকান চালান, চা বিক্রি করেন। কিছুক্ষণের বিরতি, টুকটাক কাজ সারা। সন্ধেবেলা তাঁর দোকানে স্ন্যাকস পাওয়া যায়। তারও প্রস্তুতি নেন টুকটুকি একাই। আপাতত তার দোকানের বয়স মাত্র এক সপ্তাহ।
সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় পাতায় টুকটুকির এই উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়েছে। সেই খবর পেয়ে, এমএ পাশ টুকটুকির লড়াইয়ের কথা জেনে রবিবার তাঁকে নিজের দপ্তরে ডেকে পাঠান রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সংবাদ মাধ্যমকে টেলিফোনে তিনি জানিয়েছেন, ”ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি। খুবই ভাল উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা চাকরির কথা বলেছিলাম। উনি জানিয়েছেন, চাকরি করতে চান না। কোনও আর্থিক সাহায্যও প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন। তবে ওঁর দোকানটিকে কলকাতায় নিয়ে এলে ভাল হয় বলে আমার কাছে বলেছেন। আমি আমাদের কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা বলব। যদি কলকাতা পুরসভার কোনও মার্কেটে ওঁর এই দোকান নিয়ে যাওয়া যায়, সেটা দেখতে বলব। এছাড়া টুকটুকির এই ব্র্যান্ডকে আমরা যে কোনও সরকারি মেলা কিংবা অনু্ষ্ঠানে তুলে ধরব।” মন্ত্রী আরও জানান, যেভাবে মহিলাদের স্বনির্ভরতায় এগিয়ে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে টুকটুকির এই চেষ্টা, উদ্যোগের কথা জেনে খুবই খুশি হবেন।
চাকরি না পেয়ে নয়, চাকরি করতে না চেয়েই স্বনির্ভরতার অন্য পথ বেছে নিয়েছেন টুকটুকি। এমনটাই তিনি জানিয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমকে। মন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিলেও চাকরি কার্যত প্রত্যাখ্যানই করেছেন। বরং ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’ ব্র্যান্ডকে যাতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে সরকারি সাহায্য চাইলেন হাবড়ার লড়াকু মেয়ে।