এজেন্টদের কাজের সময় বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দিল ডাক বিভাগ
এবার পোস্ট অফিস এজেন্টদের কাজের জন্য আলাদা সময় বেঁধে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করল ডাক বিভাগ। তারা জানিয়েছে, স্বল্প সঞ্চয় এজেন্টরা পোস্ট অফিসে তাঁদের কাজ করাতে পারবেন নির্দিষ্ট সময়ে। তার ব্যবস্থা করতে হবে পোস্ট মাস্টার বা কর্তৃপক্ষকেই। তবে সেই সময়ের বাইরে যদি কোনও এজেন্ট তাঁর কাজ নিয়ে আসেন, তাহলেও তাঁকে সাহায্য করতে হবে। এজেন্টদের সুবিধার্থেই এই নিয়ম চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক বিভাগের কর্তারা। যদিও এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত সদর্থক বলতে নারাজ এজেন্টরা।
কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রক নির্দেশিকায় বলেছে, অফিসের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এজেন্টদের জন্য আলাদা সময় বার করে দিতে হবে। সেই সময় এজেন্টরা তাঁদের কাজ করাতে পারবেন। অন্যদিকে সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি সাধারণ গ্রাহক তাঁদের কোনও কাজ নিয়ে কাউন্টারে আসেন, তাহলে তাঁকেও ফিরিয়ে দেওয়া চলবে না। কোন সময়টি এজেন্টদের জন্য বেঁধে দেওয়া হবে, তা ঠিক করবে কর্তৃপক্ষ। তবে তা পোস্ট অফিস অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু যদি সেই নির্দিষ্ট সময় ছাড়াও এজেন্টরা আসেন, তাহলে তাঁদের ফেরানো চলবে না। কাউন্টার ফাঁকা থাকলে বা ভিড় কম থাকলে তাঁদের সুযোগ দিতে হবে। অর্থাৎ গোটা প্রক্রিয়াটিই হবে সহযোগিতার ভিত্তিতে। গ্রাহক বা এজেন্ট, কাউকেই এই বিষয়ে ফিরিয়ে দেওয়া চলবে না।
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নির্মলকুমার দাস বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে নিয়ম চালু করল, তাকে আমরা পুরোপুরি সমর্থন করছি না। কারণ, এটি আসলে ‘আই ওয়াশ’ বা লোক দেখানো। সরকারের উচিত আরও গভীরে গিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা। এই সিদ্ধান্ত থেকে মনে হতে পারে, সরকার ক্ষুদ্র সঞ্চয় এজেন্টদের পাশে দাঁড়াতে চাইছে। আসলে তা নয়। সরকার এখন পোস্ট অফিসের কাজকর্ম সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। মুদির দোকান থেকেও পোস্টাল কজকর্ম করা যাবে। অর্থাৎ সরকার সবাইকে রোজগারের সুযোগ করে দিতে চাইছে। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট করে বলা দরকার। তা হল, একটি থালায় ভাত দিয়ে সবাইকে যদি সেই থালা থেকে খেতে দেওয়া হয়, তাহলে কেউই ভালো ভাবে খেতে পারবে না। সরকার সেটাই চাইছে। পোস্ট অফিসের কাজের কমিশন এমনিতেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুদ কমিয়ে সঞ্চয় প্রকল্পগুলিকে ঝিমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে এমনিতেই রোজগার কমছে এজন্টদের। আবার অন্যদিক থেকে দেখলে, বেশিরভাগ পোস্ট অফিস চলে ভাড়া বাড়িতে। সেখানে যথাযথ পরিকাঠামো নেই। পর্যাপ্ত কর্মী নেই। এমনকী বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। শুধু এই কারণে কোনও মহিলা এজেন্ট কাজ করতে পারেন না, এমন উদাহরণও আছে। এই অবস্থায় এজেন্টদের জন্য আলাদা সময় বার করার মতো সিদ্ধান্ত প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।