রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ভ্যাকসিন বর্মেই কমছে কোভিডে মৃত্যুহার

November 8, 2021 | 2 min read

দুর্গাপুজো মিটতেই কলকাতায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। পুজোর সময়ও জারি ছিল সংক্রমণ। দৈনিক সংক্রামিত হচ্ছিলেন দেড়শো থেকে দু’শো জন। সেখানে এখন কোনও কোনও দিন আড়াইশো ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে আশ্বস্ত হওয়ার মতো বিষয় একটাই, তা হল শ’য়ে শ’য়ে আক্রান্ত হলেও মারা যাচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এমনকী হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও দৈনিক আক্রান্তের তুলনায় অনেক কম। আসলে এই রোগের হাত থেকে প্রাণশক্তি বাড়িয়েছে ভ্যাকসিন। তথ্য বলছে, টিকা নেওয়ার পরে প্রায় ৫৪ শতাংশ কমেছে মৃত্যুহার। যা অনেকটাই স্বস্তি দিচ্ছে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।

কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, গত ১৯ মাস ধরে আমরা করোনা-যন্ত্রণার মধ্যে আছি। এই সময়কার বুলেটিন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এই সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে ভ্যাকসিনেই। আমরা যদি এই সময়কালকে দু’টি ভাগে ভাগ করি তাহলে দেখা যাবে, টিকাকরণের আগের ন’ মাসের তুলনায় টিকা পরবর্তী দশ মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়লেও মৃত্যুহার কমেছে ৫৪ শতাংশ। আগামী দিনে এই মৃত্যুহার আরও কমবে বলেই মত স্বাস্থ্যকর্তাদের।

আধিকারিকরা বলছেন, কলকাতায় ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হয়েছে। ধরে নিচ্ছি, প্রথম টিকা নেওয়ার অন্তত ১৫ দিন পর মানব শরীরে তা কার্যকর হতে শুরু করেছে। ভ্যাকসিন শরীরে গিয়ে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে বর্ম তৈরি করেছে। প্রথমদিকে, প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ কিংবা ৩১ দিন পর দ্বিতীয় টিকা দেওয়া হচ্ছিল। দেখা যাচ্ছে, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৬৪২ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মে-জুন মাসে উত্তাল ছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পরিসংখ্যান বলছে, এই পর্বে আক্রান্তের সংখ্যা বিপুল হলেও মারা গিয়েছেন ১,৯৯১ জন। অর্থাৎ মৃত্যুহার ১.০৫ শতাংশ। প্রাক-ভ্যাকসিন পর্বের হিসেব বলছে, মৃত্যুহার অনেকটাই বেশি। গত বছর ১ জুন থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত শহরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৬৬৫ জন। আর তাঁদের মধ্যে মারা গিয়েছেন ২,৮৬০ জন। অর্থাৎ মৃত্যুহার প্রায় ২.২৭ শতাংশ।

টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেও যে কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন না, তা নয়। দু’টি ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও বহু সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আসলে ‘কিছু হবে না’ গোছের মানসিকতাই একারণে দায়ী। আর তাই এই অংশ ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইতিউতি। মানছেন না করোনা বিধি। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, বিনা মাস্কে পুজো মার্কেটিং আর পুজোর দিনগুলিতে বাঁধভাঙা উল্লাসই ফের নতুন করে বরণ করেছে করোনাকে। তবে স্বস্তি একটাই, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও মৃত্যুহার নীচের দিকেই।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুব্রত রায়চৌধুরী বলেন, মোটামুটি দ্বিতীয় ডোজের পর শরীরে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে বলে আমরা ধরে নিচ্ছি। তাই, বারবার টিকাকরণের উপর জোর দিচ্ছি আমরা। দু’টি টিকা নেওয়ায় পর নাগরিকদের একাংশ কিছুটা ‘দুঃসাহস’ দেখানোয় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু মারা যাচ্ছেন খুব কম। এমনকী করোনা হাসপাতালেও এখন ৭৫-৮৫ শতাংশ বেড ফাঁকা। এটা অবশ্যই ভালো লক্ষণ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#vaccine shield, #covid19

আরো দেখুন