দেউচা পাচামি প্রকল্পে জমিদাতাদের দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর
বীরভূমের দেউচা-পাচামি (Deucha Pachami) কয়লা ব্লকের হাত ধরে রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে জোয়ার আসতে চলেছে। ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে অর্থনীতি। এই প্রকল্প নিয়ে আগে থেকেই বহু পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্যের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সেই প্রকল্প নিয়ে আরও একধাপ এগোনোর আশ্বাস শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। বললেন, ”সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল, সেভাবে আমরা তা করব না। দেউচা-পাচামিতে ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ দেওয়া হবে।” এদিন সরকারের তরফে দেউচা-পাচামিতে শিল্পস্থাপন নিয়ে বিস্তারিত আকারে প্রেস বিবৃতি জারি করা হয়েছে।
দেউচা পাচামি কয়লা খনির কাজ নিয়ে টালবাহানা চলছিল বহুদিন ধরে। প্রশাসনের তরফে একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা কারণে তা ফলপ্রসূ হয়নি। ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এলাকা পরিদর্শন করে সবুজ সংকেত দেওয়ার পরও মেটেনি সেই সমস্যা। পরবর্তীতে প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার তৎপরতায় একটা সমাধান সূত্র বের হয়। তিনিই জানিয়েছিলেন, চার দফায় কয়লা খনির কাজ হবে। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম সফরে গিয়ে জানিয়েছিলেন, পাচামিতে প্রায় ২ মিলিয়ন কয়লা রয়েছে। খনির প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হতে ৫ থেকে ৬ বছর সময় লাগতে পারে।
মঙ্গলবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানালেন, ”দেউচা-পাচামির হাত ধরে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল বদল ঘটতে চলেছে। এখানে শিল্পস্থাপন হলে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। আশেপাশের মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে। তবে আমরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিয়ে তবেই ওখানে শিল্প গড়ব। সিঙ্গুরের (Singur) মতো জমি অধিগ্রহণ করে নয়। দেউচা-পাচামিতে ১০ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া হবে সরকারের তরফে।”
দেউচা-পাচামিতে কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিলে কী কী সুবিধা পাবেন জমিদাতা, তার বিস্তারিত জানানো হয়েছে লিখিত আকারে। বিঘা প্রতি জমির দাম ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা, পুনর্বাসনের জন্য আরও ৫ লক্ষ টাকা এবং শিল্প এলাকার কলোনিতে ৬০০ বর্গফুটের একটি বাড়ি পাবেন। ৩ হাজার জন ক্রাশার লেবারের এক বছরের জন্য় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্যাকেজ। এছাড়া স্থানীয় যে কর্মীরা দেউচা-পাচামিতে কাজ পাবেন, তাঁদের জন্যও আরও আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে, সিঙ্গুরে টাটার শিল্প গড়ার সময়কার অশান্ত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে দেউচা-পাচামিতে না হয়, সেই চেষ্টাই রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সরকারের।