বাংলায় ২০২১-২২ আর্থিক বর্ষে প্রায় ২৪ লক্ষ ছাত্রী পেতে চলেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা
২০২১-’২২ আর্থিক বর্ষে রাজ্যে ২৪ লক্ষ ৪ হাজার ৪০৮ জন ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। প্রত্যেক জেলাকেই টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ শেষ। মুর্শিদাবাদের মতো কয়েকটি জেলায় টার্গেটের থেকেও বেশি নাম নথিভুক্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আর্থিক বর্ষে সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ছাত্রীরা সুবিধা পাচ্ছেন। সেখানে ২ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৪২ জন ছাত্রীকে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। মুর্শিদাবাদের দু’লক্ষ ২৯ হাজার জন ছাত্রীর অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের টাকা ঢুকবে। এই জেলায় টার্গেট ছিল ২ লক্ষ ১২ হাজার ৮১৮।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে মুর্শিদাবাদ জেলায় শিক্ষা নিয়ে মেয়েদের তেমন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু এখন কন্যাশ্রী বা ঐক্যশ্রীর মতো প্রকল্প চালু হওয়ায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই পড়াশোনায় এগিয়ে রয়েছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে তারা তাক লাগাচ্ছে। জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী বলেন, এই জেলা থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে এক ছাত্রী প্রথম হয়েছেন। নিটেও ভালো ফল হয়েছে। মেয়েরা পড়াশোনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার দু’লক্ষ ১১ হাজার ৩৬৫ জন পড়ুয়া কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে টাকা সাহায্য পাবেন। তারমধ্যে দু’লক্ষ ৪৫ হাজার ৪১০ জন নতুন। এক লক্ষ ৮৯ হাজার ২২৮ জনের নাম আগে থেকেই নথিভুক্ত রয়েছে। মালদহে এক লক্ষ ১৫ হাজার ছাত্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এছাড়া বীরভূমের এক লক্ষ ৫৪ হাজার ৩৭, পূর্ব বর্ধমানের এক লক্ষ ২৬ হাজার ৭৪, হুগলির এক লক্ষ ২৭ হাজার ২৬৯ ছাত্রীকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা দেওয়া হবে। কে ওয়ানের পাশাপাশি কে-টু প্রকল্পেও টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিক শুভদীপ গোস্বামী বলেন, আমাদের জেলায় এক লক্ষ ৪৫ হাজার ২১২ জন ছাত্রীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। বাকিরাও কয়েকদিনের মধ্যেই অ্যাকাউন্টে টাকা পাবেন। জেলায় ৫৭ হাজার ৯৬৪ জন পড়ুয়া কে-টু প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা পাবেন। এক আধিকারিক বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। সেই কারণে কে-টু প্রকল্পের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে প্রথম দিকে সমস্যা হচ্ছিল। পরে ছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করা হয়। এই প্রকল্পের জন্য আগের তুলনায় নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে গিয়েছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য পড়ুয়ারা প্রথমে স্কুলে আবেদন করেন। তা যাচাই করে দেখার পরে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়।
এই প্রকল্পে পুরুলিয়া জেলার ৯৮ হাজার ৭৬৫ জন ছাত্রীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর টার্গেট নেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক লক্ষ ৪৬ হাজার ৩৯৯, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক লক্ষ ৩৩ হাজার ৬৯২, ঝাড়গ্রামের ৩৩ হাজার ছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। কালিম্পং জেলার টার্গেট কম। এখান থেকে ছ’হাজার ৭৪১ জন পড়ুয়া এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। বাঁকুড়ায় এক লক্ষ সাত হাজার ৩২১, কোচবিহারে ৮৮ হাজার ৮৫২, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৪৩ হাজার ৮৪৩ জনের অ্যাকাউন্টে কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাঠানো হবে। শিক্ষকদের দাবি, অন্যান্য আর্থিকবর্ষে এই সময়ে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবছর কিছুটা দেরি হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর ছুটির কারণেই সবার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যায়নি। তবে টাকা পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায় টার্গেটের থেকেও বেশি নাম নথিভুক্ত হয়েছে। ওই সমস্ত জেলার নথিভুক্ত সকলেই টাকা পাবেন।