বাঘ-জঙ্গলের গল্প নিয়ে আসছে সৃজিতের নতুন হিন্দি ছবি ‘শের-দিল’
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি মানেই বাণিজ্যিক মশলা ছাড়াও তাতে এমন কিছু উপাদান থাকবে তা দর্শকদের ভাবাবে। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মুগ্ধতায় পরিণত করবে। বর্তমানে জোরকদমে নিজের তৃতীয় ছবির কাজ শুরু করতে চলেছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই পরিচালক। ছবির নাম ‘শের দিল’। মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে পঙ্কজ ত্রিপাঠিকে। সঙ্গে নীরজ কবি আর সায়নী গুপ্তকেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে এই ছবিতে। জোর খবর, চলতি মাসের ১৮ তারিখ থেকেই নাকি নাকি ‘শের দিল’ এর শ্যুটিং শুরু করে দেবেন সৃজিত।
তা কী নিয়ে এই ‘শের দিল’ এর গল্প? সূত্রের খবর, সত্য ঘটনা অবলম্বনেই ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন সৃজিত। সালটা ২০১৬। সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় চোখ কপালে তোলার মতো একটি খবর। ৬০২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন পিলিভিট ব্যাঘ্র প্রকল্প। ৫০টিরও বেশি বাঘ রয়েছে সেখানে। জঙ্গলের বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কয়েকটি ছোট্ট ছোট্ট গ্রাম। সরকারি নির্দেশ রয়েছে সেইসব গ্রামের কারও বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হলে, তাঁর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। সেই খবর শুনে গ্রামের হতদরিদ্র কিছু পরিবার তাঁদের কোনও সদস্যকে জঙ্গলে পাঠিয়ে দেয়! অনেকসময় কোনও মানুষ নিজেই জঙ্গলে প্রবেশ করে বাঘের খাদ্য হওয়ার আশায়। দু’টি ব্যাপারের লক্ষ্য এক। সে মারা যাওয়ার পর তাঁর পরিবার অন্তত যেন সেই ১০ লক্ষ টাকা পেয়ে একটু সুখের মুখ দেখতে পারে! এরপর পরিবারের সদস্যরাই তাঁদের সদস্যের মৃতদেহটি জঙ্গল থেকে বের করে এনে জঙ্গলের বাইরে রেখে দেয়, টাকা পাওয়ার আশায়।
ঘটনাটা রেখাপাত করেছিল পরিচালকের মনে। এ প্রসঙ্গে সৃজিত জানান,’ সেই খবর পড়ে চমকে উঠেছিলাম। একইসঙ্গে মানুষের সাহস এবং অমানবিকতা কোন পর্যায় যেতে পারে তা ভেবে অবাক হয়েছিলাম। আমার এই ছবিতে অবশ্য প্রধান চরিত্রের নাম গঙ্গারাম। অভাবের কাঁথায় মোড়া সংসার বাঁচাতে বাঘের মুখোমুখি হওয়ার জন্য জঙ্গলে প্রবেশ করে সে। তারপর যা হয় সেই নিয়ে এগোবে ছবি। এখানে একজন মানুষের সাহস, অসহায়তা এবং সর্বোপরি তাঁর সংগ্রামের গল্প বলতে চেয়েছি আমি’।