দুই সরোবরে ছট পুজো না হওয়ায় খুশি প্রশাসন ও পরিবেশপ্রেমীরা
রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরে ছটপুজোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। ফলে, রাজ্য প্রশাসনও এই দুই সরোবরে ছটের আচারবিধি করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল। দিনের শেষে বেঁচেছে সরোবরের জল, পরিবেশও। খুশি প্রাতঃভ্রমণকারী থেকে শুরু করে পরিবেশপ্রেমীরা। সুষ্ঠুভাবে ছট উৎসব কেটে যাওয়াতে নিশ্চিন্ত প্রশাসনও।
দুই সরোবর বুধবার এবং বৃহস্পতিবার পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছিল। প্রত্যেকটি গেটে বাঁশের ব্যারিকেড এবং ফাঁকা জায়গায় টিনের আচ্ছাদন দিয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছিল কেএমডিএ। রাখা হয়েছিল পর্যাপ্ত পুলিসি নিরাপত্তা। গত দু’বছর আগের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল দুই সরোবর। সব মিলিয়ে গত দু’দিনে ভালোয় ভালোয় মিটেছে ছট উৎসব। যা দেখে নিশ্চিন্ত সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতঃভ্রমণকারী সমরেশ ঘোষ। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর আগের স্মৃতি এখনও চোখে ভাসে। রবীন্দ্র সরোবরের গেটে তালা ভেঙে যেভাবে ছটপুজো করার নামে তাণ্ডব চলেছিল, তা দেখে আঁৎকে উঠেছিলাম। কিন্তু গত বছরও প্রশাসন সবরকম ব্যবস্থা নিয়ে লেটার মার্কস পেয়েছিল। এবছরও প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল নজরকাড়া। অন্যদিকে, দুই লেকের বিকল্প হিসেবে শহরজুড়ে গঙ্গার ঘাট ছাড়াও একাধিক স্থায়ী এবং অস্থায়ী জলাশয় এবং কৃত্রিম জলাশয় ব্যবস্থা করেছিল কলকাতা পুরসভা এবং কেএমডিএ। ফুল সহ নানা সামগ্রী ফেলার জন্য পৃথক ভ্যাট, মহিলাদের জন্য চেঞ্জিং রুম, বাথরুম, প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, ডুবুরি সহ বড় পরিকাঠামো প্রস্তুত ছিল।
ব্রতপালনকারীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। পুজোর পর তড়িঘড়ি সাফসুতরো করা হয়েছে গঙ্গার ঘাট, বিকল্প জলাশয়গুলি। যোধপুর পার্ক, নোনাডাঙা, আনন্দপুর, পাটুলি, গলফ ক্লাব, পণ্ডিতিয়া, বাগবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় বিকল্প জলাশয়গুলি বৃহস্পতিবার পুজোর পর থেকেই পরিষ্কার করেছে কেএমডিএ ও পুরসভা। এড়ানো গিয়েছে দূষণ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তথা পরিবেশ বিজ্ঞানী ডঃ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, মানুষের সচেতনতাই বড় কথা। আমরা চাইলেই করতে পারি, এটাই তার প্রমাণ। প্রশাসনের ভূমিকা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। এভাবেই প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে প্রশাসনিক তৎপরতা দেখাতে হবে। তাহলে জনসচেতনতাও বাড়বে। শুধুমাত্র রবীন্দ্র বা সুভাষ সরোবর নয়, সব সরোবরে এভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হলে পরিবেশ রক্ষা পাবে।