বিএসএফের খবরদারির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো আন্তর্জাতিক সীমানাবেষ্টিত রাজ্যগুলিতে সম্প্রতি বিএসএফের খবরদারির এলাকা বাড়িয়েছে মোদী সরকার। বিএসএফ আইন সংশোধন করে এই এক্তিয়ার সীমানার ভিতরে ৫০ কিমি পর্যন্ত করা হয়েছে। আগে তা ছিল মাত্র ১৫ কিমি। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলি তীব্র আপত্তি তুলেছে। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাব সরকার বিধানসভায় মোদী সরকারের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব নিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ পঞ্জাবের মানুষকে অপমান করেছে। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আহত হয়েছে।
কংগ্রেসের পাশাপাশি চরণজিৎ সিং চান্নির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অকালি দলও। তবে ওই বিধানসভার দুই বিজেপি সদস্য এদিন অধিবেশনে অনুপস্থিত ছিলেন।
পঞ্জাব প্রথম হলেও, মোদী সরকারের এহেন একতরফা পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ইতিমধ্যেই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন। মমতাও মনে করেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলির ৫০ কিমি অভ্যন্তরে বিএসএফের তল্লাশি, ধরপাকড় বা টহলদারির অর্থ, রাজ্যের ক্ষমতাকে খর্ব করা। এটা বাস্তবিকই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী। রাজ্যের এই মনোভাব এবার এখানেও বিধানসভায় প্রস্তাব আকারে আনার কথা ঘোষণা করেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহেই আসতে পারে। এবিষয়ে আজ শুক্রবার বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হতে পারে। প্রসঙ্গত, বিএসএফের খবরদারির এলাকা বৃদ্ধির কবলে অসমও পড়ছে। তবে অসম সরকার এখনও চুপ করে রয়েছে।
এদিকে, এই ডামাডোলের আবহে সীমান্ত বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য আজ কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বিএসএফের শীর্ষ আধিকারিকরা। হিডকো ভবনে এই বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা, ডিজি নীরজনয়ন এবং সীমান্তবর্তী ১২ জেলার ডিএম-এসপি। বিএসএফের ক্ষমতার এলাকা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ নিয়ে বৈঠকে জোর চর্চা চলতে পারে। রাজ্যের অভ্যন্তরে বিএসএফের খবরদারির এলাকা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত করার মাধ্যমে রাজ্য পুলিসের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলে সওয়াল করবে রাজ্য। ‘বর্ডার ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক আলোচ্যসূচিতে সীমান্ত এলাকায় জমির ক্রয়-বিক্রয়ের সমস্যা নিয়েও কথা হবে। মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।