রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

স্বরাষ্ট্রসচিবের বৈঠকের আগের সীমান্ত সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তথ্যের একাধিক ভুল ধরিয়ে দিল রাজ্য

November 13, 2021 | 2 min read

বিএসএফ ইস্যুতে এবার একটি নয়, এক জোড়া আপত্তি তুলে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংঘাতের পথে হাঁটল রাজ্য। শুক্রবার কলকাতায় আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার সামনে রাজ্যের সীমান্ত সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তথ্যের একাধিক ভুল ধরিয়ে দিল রাজ্য। তীব্র আপত্তি জানিয়ে অবিলম্বে সেই ভুল সংশোধনের দাবিও জানান রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় আমলারা।

অন্যদিকে, বিএসএফ-এর এলাকাবৃদ্ধির বিষয়ে মোদী সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার বিধানসভায় বিশেষ প্রস্তাব আনতে চলেছে। আগামী মঙ্গলবার এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় কেন্দ্রের এহেন একতরফা পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বক্তব্য রাখতে পারেন।

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত এলাকার সুরক্ষা জোরদার করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের এই উদ্যোগে বিশেষ আপত্তি নেই রাজ্যের। মূলত এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব এদিন বিএসএফ-এর শীর্ষকর্তা সহ সদলবলে শহরে এসেছিলেন রাজ্যের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে। রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা, ডিজি মনোজ মালব্য, ভূমিসচিব স্মারকি মহাপাত্র সহ ১০টি জেলার ডিএম হাজির ছিলেন সেখানে। তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সীমান্ত বরাবর মোট সাতটি জায়গায় হবে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বা ল্যান্ড পোর্ট। বিমান বা সমুদ্র বন্দরের আদলে এই স্থলবন্দরগুলি তৈরি করবে কেন্দ্র। এছাড়া বিএসএফ-এর আউটপোস্ট বা চৌকি তৈরি এবং সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও এদিনের বৈঠকে আলোচ্য ছিল। আরও ১৮২ কিলোমিটার কাঁটাতারে বেড়া দেওয়ার কাজ শীঘ্রই শুরু করার ব্যাপারে উভয়পক্ষই একমত হয়। তবে আউটপোস্ট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমিবাবদ অর্থ এখনও বিএসএফ জেলা প্রশাসনকে না দেওয়ায় সেই কাজ থমকে রয়েছে বলে রাজ্যের তরফে জানানো হয় ভাল্লাদের। তবে আধুনিক মানের স্থলবন্দর তৈরির ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধা না দেখা দেয় সে বিষয়ে সবাইকে আগাম তৎপর হওয়ার অনুরোধ জানান ভাল্লা।

এই বৈঠকের শুরুতেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের সীমান্ত সংক্রান্ত নানা তথ্য পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সকলের সামনে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সেই তথ্যে জায়গা এবং জেলার নাম সহ বাস্তবের সঙ্গে অমিল বেশ কিছু তথ্য ভুল বলে চেপে ধরেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। পাল্টা তথ্য হাজির করেন তাঁরা। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে এক প্রস্থ চাপান-উতোরও চলে। তবে শেষমেশ ভাল্লার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়নি। ভুল তথ্য শুধরে নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।

বিএসএফ-এর ক্ষমতার এলাকা বৃদ্ধি নিয়ে মাসখানেক আগে কেন্দ্র যে নোটিস জারি করেছে তার তীব্র বিরোধিতা করেছে বাংলা ও পাঞ্জাবের মতো অবিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের ওই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে পাঞ্জাবের কংগ্রেস শাসিত সরকার বিধানসভায় বিশেষ প্রস্তাব পাশ করেছে। এই আবহে ভাল্লাদের বৈঠকে প্রসঙ্গটি ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সে পথে কেউ যাননি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যুকে যে সহজে ছেড়ে দেবেন না সেটা স্পষ্ট। কারণ, এবার রাজ্যের তরফে বিধানসভায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণের পথে এগচ্ছেন তিনি। বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটি এদিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Bengal, #BSF, #Ajay Bhalla

আরো দেখুন