রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাংলায় সম্পন্ন হয়েছে এক চতুর্থাংশের পূর্ণাঙ্গ টিকাকরণ, তথ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের

November 16, 2021 | 3 min read

পশ্চিমবঙ্গে টিকার ফার্স্ট ডোজ প্রাপকের সংখ্যা ৬ কোটি পার হল। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেব বলছেন, জেলাভিত্তিক তথ্য মেলালে প্রায় ৮৩ শতাংশ টিকার ফার্স্ট ডোজ পেয়েছেন। ১০০ কোটি টিকাকরণের (Covid Vaccine) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে দেশে। এর মধ্যে বাণিজ্যনগরী মুম্বই প্রথম যেখানে ১৮ বছরের উর্ধ্বে জনসংখ্যার প্রত্যেককেই কোভিড টিকার ফার্স্ট ডোজ দেওয়া শেষ হয়েছে। টিকাকরণে গতি আনতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মন্ত্রী। বছর শেষের আগেই দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের সকলকেই টিকার অন্তত একটি করে ডোজ দেওয়ার বৃহত্তর পরিকল্পনা আছে মোদী সরকারের। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গও। তবে দুটি ডোজ মিলিয়ে যদি হিসেব করা হয় তাহলে এখনও অবধি রাজ্যে টিকাকরণ হয়েছে এক চতুর্থাংশের। সেকেন্ড ডোজ এখনও পানননি অনেকে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে এখনই ৬ কোটি মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। সেকেন্ড ডোজ পেয়েছেন ২ কোটি ৪৩ লক্ষের কাছাকাছি। রাজ্যের জনসংখ্যা ১০ কোটি ধরে হিসেব কষলে দেখা যাবে এক চতুর্থাংশের মতোই টিকাকরণ শেষ হয়েছে এখনও। কলকাতায় টিকাকরণের হারও ভালর দিকেই। সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র মিলিয়ে এ শহরে টিকার প্রথম ডোজ প্রাপকের সংখ্যা প্রায় দেড়শো শতাংশের কাছাকাছি।

ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যবাসীকে কোভিড ভ্যাকসিনের একটি করে ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে নবান্নেরও। টিকাকরণে গতি আনতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসুস্থ ও শয্যাশায়ীদের টিকার ডোজ দেওয়ার বড় উদ্যোগও নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে দ্বিতীয় ডোজ পাননি এমন লোকজনের সংখ্যাও অনেক। কোথায় টিকার ঘাটতি হচ্ছে, ডোজ পাচ্ছেন না মানুষজন সেইসব খোঁজও নেওয়া হবে।

টিকাকরণের হারে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে উত্তরপ্রদেশ। মোট টিকাকরণ হয়েছে ১৪ কোটির বেশি, ১০ কোটি মানুষ প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৩ কোটির বেশি। এর পরেই মহারাষ্ট্র যেখানে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১০ কোটির বেশি। প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটির কাছাকাছি, সেকেন্ড ডোজ ৩ কোটি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও টিকাকরণ শুরু হয়। সেই দিন থেকে গত ৩০ এপ্রিল অবধি এক কোটি টিকাকরণ হয় বাংলায়। আর এখন সেই সংখ্যাই ৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। স্বাস্থ্য দপ্তর জানাচ্ছে, রাজ্যে এখনই ৮ কোটি ৪৩ লক্ষ মানুষের টিকাকরণ হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ প্রাপকের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি, সেকেন্ড ডোজ পেয়েছেন ২ কোটি ৪৩ লক্ষের কাছাকাছি।

কলকাতা ও জেলাভিত্তিক টিকাকরণের হার কত

জেলা ভিত্তিক এই হিসেব দেখলে বোঝাই যাবে আমাদের রাজ্যেও টিকাকরণ সমান তালেই চলছে। কলকাতার হিসেবে আগে আসা যাক। এ শহরে মোট জনসংখ্যা ৪৬ লক্ষের বেশি। এর মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে জনসংখ্যা ৩৩ লক্ষ ৬৭ হাজার। এর মধ্যে কোউইন পোর্টালের হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র মিলিয়ে টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৪৮ লক্ষ, সেকেন্ড ডোজ প্রাপকের সংখ্যা ৩২ লক্ষ। ফার্স্ট ডোজ পেয়েছেন প্রায় ১৪৩ শতাংশ, সেকেন্ড ডোজ হয়েছে ৬৮ শতাংশের কাছাকাছি।

রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন গড়ে ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। আলিপুরদুয়ারে ৯ লাখের বেশি ফার্স্ট ডোজ পেয়েছেন, সেকেন্ড ডোজ ৪ লাখের কাছাকাছি। বাঁকুড়ায় ১৬ লাখের বেশি ফার্স্ট ডোজ পেয়েছেন, সেকেন্ড ডোজ দেওয়া শেষ হয়েছে ৫ লাখের বেশি। কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, কালিম্পং, জলপাইগুড়িতেও প্রথম ডোজ পেয়েছেন গড়ে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশের বেশি। সেকেন্ড ডোজ প্রাপকের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি। উত্তর ২৪ পরগনায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫৩ লাখের কাছাকাছি ফার্স্ট ডোজ পেয়েছেন, সেকেন্ড ডোজ প্রাপকের সংখ্যা ২৫ লাখের কাছাকাছি।

পুজোর পরে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে নবান্ন। রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও যোগ দেন ওই বৈঠকে। মুখ্যসচিব পরামর্শ দিয়েছেন, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোভিড টেস্ট আরও বাড়াতে হবে। করোনার টিকাকরণ বাড়ানোয় বেশি জোর দিতে বলেছেন মুখ্যসচিব। তাঁর বক্তব্য, ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮ ঊর্ধ্ব সাত কোটিকে টিকার অন্তত একটি ডোজ দেওয়া শেষ হবে। তারই পরিকল্পনা চলছে জোরকদমে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #covid vaccine, #Vaccination Drive, #Vaccine First Dose

আরো দেখুন