এজেন্সির মাধ্যমে ডাককর্মী নিয়োগের টেন্ডার, বিপুল কাজ হারানোর অশনি সঙ্কেত?
দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ডাক পরিষেবা ঘিরেও এবার অশনি সঙ্কেত। উন্নত পরিষেবা ও সরকারি খরচ লাঘবকে ‘ঢাল’ করে পিছনের দরজা দিয়ে কর্পোরেটদের নাক গলানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে আগেই। আর এবার দেশে এই প্রথম কর্মী নিয়োগের জন্য বেসরকারি সংস্থার কাছে টেন্ডার আহ্বান করল ডাকবিভাগ। নিউদিল্লি সেন্ট্রাল ডিভিশন থেকে এজেন্সির মাধ্যমে ডাককর্মী নিয়োগের টেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। তাতেই আতঙ্ক দানা বাঁধছে কর্মী-আধিকারিকদের অন্দর মহলে। কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন কর্মীরা।
গত মাসের ২১ তারিখ নিউ দিল্লি সেন্ট্রাল পোস্টাল ডিভিশনের এক টেন্ডার নোটিস প্রকাশ হয়েছে। এতদিন ডেলিভারি পার্সোনাল (পোস্টম্যান) ও মাল্টি টাস্কিং স্টাফ—দু’টি ক্ষেত্রেই নিয়োগ হতো পোস্টাল বিভাগের নিজস্ব পদ্ধতিতে। কিন্তু দু’টি পদেই নিয়োগের আউটসোর্সিং হয়েছে। কর্মী নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এজেন্সিদের কাছে। অর্থাৎ, কর্মী নিয়োগের দায়ভার আর নিতে চাইছে না দপ্তর।
এর সঙ্গেই আতঙ্ক বাড়িয়েছে ডাকমিত্র। ফ্র্যাঞ্চাইজি স্কিম রয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। ডাকমিত্র নাম দিয়ে তাকে নতুন আঙ্গিকে পেশ করেছে কেন্দ্র। যোগাযোগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি পোস্টাল সার্কেলের প্রধানের কাছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি স্কিম চালুর জন্য প্রস্তাব গিয়েছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে তিনটি ক্যাটিগরির। কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে কমপক্ষে ৩০টি সেন্টার খুলতে হবে বলে শর্ত চাপিয়েছে কেন্দ্র। ওই সেন্টারগুলি থেকেই ডাক পরিষেবা দেওয়া হবে। এখন যদি কোনও বহুজাতিক সংস্থা এতে অংশ নেয় ও বৃহৎ আকারে এই ডাক পরিষেবা দেওয়া শুরু করে, তাহলে বাস্তবিকই সমস্যায় পড়বে গ্রামীণ বা শাখা পোস্ট অফিসগুলি। তখন আর গ্রামীণ পোস্ট অফিসগুলিতে গ্রাহকরা আসবেন না। বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করবে। প্রথমদিকে গ্রাহক টানতে বাড়তি সুযোগ দিয়ে পরে দেশবাসীর কাঁধে বাড়তি বোঝা চাপানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যেমনটা হয়েছে মোবাইলের ক্ষেত্রে। প্রতিযোগিতার চাপ এবং দুর্বল পরিষেবার জন্য বিএসএনএল উঠে যাওয়ার অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারি কর্মীদের দাবি, আসলে সরকার এটিকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে দেখছে। এখনই এনিয়ে তীব্র বিরোধিতা না হলে সারা দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়াই তুলে দেবে। তারপর সব লোক নেওয়া হবে এজেন্সির মাধ্যমে। ওই সব কর্মীদের দায় সরকারকে বইতে হবে না।