প্রকল্পের কৃতিত্ব কার? মোদী-যোগীর চাপানউতরে সরগরম ভোটমুখী উত্তর প্রদেশ
উত্তরপ্রদেশের ভোট প্রচার ঘিরে যোগী আদিত্যনাথ এবং নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে গুরুত্ব ও কৃতিত্ব আদায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সাধারণত কোনও রাজ্যে নির্বাচনের আগে সরকারপক্ষ বিগত পাঁচ বছরের সাফল্যের ফিরিস্তি প্রদান করে। ভোটমুখী উপহার দিতে নানা প্রকল্পের উদ্বোধনও করে। সেই প্রবণতা যথারীতি উত্তরপ্রদেশেও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যতিক্রম হল, প্রতিটি সাফল্য নিয়েই রীতিমতো দড়ি টানাটানি চলছে মু্খ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। এই প্রবণতার পিছনে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দাবাখেলাই প্রধান চালিকাশক্তি বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ একক কৃতিত্বে যদি আগামী বছর ভোটে আবার জয়ী হয়ে যান, তাহলে নিঃসন্দেহে তিনি হবেন বিজেপির অন্যতম বড় তারকা। সেই কারণে এখন থেকেই যোগীকে তাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগী অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী। সেই কারণেই উত্তরপ্রদেশের যা কিছু উন্নয়ন ও সাফল্য প্রচার করা চলছে, তার প্রতিটি ক্ষেত্রেই যোগীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে মোদীর নাম। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মেডিকেল কলেজ। সেতু থেকে অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়ন প্রকল্প। সব অনুষ্ঠানেই দেখা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি হাজির হয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীও। মঙ্গলবারও এর ব্যতিক্রম হল না। সুলতানপুরে পূর্বাঞ্চলীয় এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনে মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ থাকলেও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মোদীর আগমন ঘটল নাটকীয় এবং নায়কোচিত পন্থায়।
এই পূর্বাঞ্চলীয় এক্সপ্রেসওয়েকে এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে প্রয়োজন হলে যুদ্ধবিমানও অবতরণ করতে পারবে। নির্মিত হয়েছে সাড়ে তিন কিলোমিটারের একটি রানওয়ে। দেশজুড়ে প্রায় সব এক্সপ্রেসওয়েকেই এখন সেভাবেই তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার এই এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করতে এয়ারফোর্সের সি ১৩০ হারকিউলিস এয়ারক্র্যাফটে চেপে অবতরণ করেন। এবং বলেন, তিন বছর আগে আমিই শিলান্যাস করেছিলাম এই এক্সপ্রেসওয়ের।
জানা গিয়েছে, ৯টি জেলাকে সংযুক্ত করবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। উত্তরপ্রদেশে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যোগী আদিত্যনাথই হবেন প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু মোদীই এদিন সব আকর্ষণের ভরকেন্দ্র হয়ে রইলেন। এবং তাঁর ভাষণে বললেন, গত সাত বছর ধরে উত্তরপ্রদেশের জন্য অনেক প্রকল্প করেছি। কিন্তু আগে রাজ ভারত সরকারকে সহায়তা করত না প্রকল্প রূপায়ণে। যোগী সরকারের আগে অন্য সরকারগুলির লক্ষ্য ছিল কীভাবে দুর্নীতি করে অর্থ আমদানি করা যায়। তাই কোনও উন্নয়নই আগে হয়নি। এখন কোনও দুর্নীতি নেই। একের পর এক পরিকাঠামো উন্নয়ন হয়েই চলেছে। প্রসঙ্গত, ৩৪১ কিলোমিটার বিস্তৃত এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২৫০০ কোটি টাকা।