হাওড়া থেকে ‘বিয়োগ’ বালি পুরসভার, বিধানসভায় বিল পাস
হাওড়া পুরসভা থেকে বালি এলাকা পৃথক হয়ে গেল। নতুন করে গঠিত হচ্ছে বালি পুরসভা। বুধবার বিধানসভায় ৫০টি ওয়ার্ড নিয়ে হাওড়া পুরসভা বিল পাস হয়ে গেল। বিলটি পেশ করে পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বালির নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে দিয়ে হাওড়াকে ৬৬ থেকে ৫০টি ওয়ার্ডের করা হল। এই সংক্রান্ত বিল অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে। এর ফলে বালি এলাকার উন্নয়ন হবে। আমরা কখনও কেন্দ্রের মতো বিমাতৃসূলভ আচরণ করি না। এই দপ্তরের কাছে এসে যে পুরসভাই টাকা চেয়েছে, তাকেই দেওয়া হয়েছে। শাসক-বিরোধী দেখা হয়নি। চন্দ্রিমা বলেন, এই তো, ক’দিন আগেই কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিয়েছিলাম। দেখলাম, কী রকম বৈষম্য। নিজেরা ৪৫ মিনিট বললেও বিরোধীদের তিন মিনিট করে বলতে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাদের প্রাপ্যও দিচ্ছে না কেন্দ্র। তবে কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য সাধ্যমতো উন্নয়ন করছে। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ প্রথমে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, মাত্র পাঁচ বছরে এমন কী হল, যাতে হাওড়ায় ওয়ার্ড সংখ্যা আবার কমাতে হল? বালিকে আলাদা পুরসভা করতে হল? অথচ আপনারা পুরভোট করছেন না। তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকার এই বিলের সমর্থনে রাখার সময় একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডা শুরু হয়। জয় শ্রীরাম-জয় বাংলা স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ। বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় হাওড়া ও বালি পুরসভার নাগরিকরা সঠিক পরিষেবা পাননি বলে অভিযোগ করেন। বিজেপিরই আরেক বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, কী এমন ঘটনা ঘটলো যে মাত্র ছ’বছর আগে সংযুক্ত করে আবার বাদ দিতে হচ্ছে। তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে বালিকে এক করে উন্নয়নের কাজ হয়েছে। আরও ভালো করে উন্নয়ন করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। কিছু বলতে পারব না। তবে আমাদের সরকারের মতো মানবিক সরকার কোথাও নেই। বাম জামানায় কী হয়েছে, আর আমরা কী করেছি, তা সবাই জানেন।
এদিকে পুরনো পুরসভাগুলির নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারে বিশেষ নজর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বুধবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য একথা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার পর পুরদপ্তর এব্যাপারে সমীক্ষা শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসে বিধায়ক অসিত মজুমদার প্রসঙ্গটি তোলেন। তিনি বলেন, হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ব্যান্ডেল-হুগলি অংশ একসময় পর্তুগিজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আবার চুঁচুড়া অংশে ছিল ডাচরা। তাদের উদ্যোগে এখানে ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নিকাশি ব্যবস্থা সময়ের সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ধস নামায় সমস্যা হচ্ছে। কেএমডিএ-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে।