পুরসভা ভোটে টিকিট বণ্টনে চরম অসন্তোষের আশঙ্কা, নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ বিজেপির কার্যালয়ে
পুরসভা ভোটে টিকিট বিলি-বণ্টন নিয়ে কি দলীয় কার্যালয়েই হামলা-বিক্ষোভের আশঙ্কা করছে বিজেপি নেতৃত্ব? ইঙ্গিত তেমনই। আর তাই রাজ্য বিজেপির সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের পার্টি অফিসের নিরাপত্তায় নিয়োগ হয়েছে ‘বাহুবলী’ রক্ষী। বুধবার ৬ মুরলী ধর সেন লেনের অফিসে ‘মোতায়েন’ হয়েছেন বাউন্সার মার্কা দুই নিরাপত্তারক্ষী। আর এদিনই কলকাতা ও হাওড়া পুরভোটের জন্য নির্বাচনী কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে বিজেপি।
গত ৯ নভেম্বর দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা দুই পুরভোট নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে কলকাতা পুরভোটের জন্য রুদ্রনীল ঘোষ, কল্যাণ চৌবে, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের মতো ‘নব্য’দের আহ্বায়ক করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই জেলা সভাপতি ও কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। হাওড়ায় রথীন চক্রবর্তীকে এককভাবে ভোটের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অসন্তোষ ব্যক্ত করে দল থেকে বহিষ্কৃত হন হাওড়া (সদর) জেলা বিজেপি সভাপতি। পরিস্থিতি আরও অপ্রীতিকর হতে পারে, এমনটা আঁচ করে কমিটি ঘোষণা স্থগিত করে দেয় বঙ্গ বিজেপি।
সেই ঘোষণাই হয়েছে বুধবার। ঝামেলার আশঙ্কায় তার আগেই অবশ্য নিয়োগ হয়ে গিয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। তবে আগের সিদ্ধান্ত থেকে কয়েক ধাপ পিছিয়ে কার্যত ‘আদি’দের মাথায় বসিয়ে দুই কর্পোরেশনের নির্বাচনী কমিটি বদলে দিয়েছে গেরুয়া পার্টি। কলকাতা পুরসভার জন্য নতুন পদ তৈরি করে ‘পর্যবেক্ষক’ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতকে। তাঁদের অধীনে রুদ্রনীল, কল্যাণরা জায়গা পেয়েছেন। একইভাবে হাওড়ার ক্ষেত্রে রথীনবাবুর সঙ্গে মনোজ পান্ডেকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে আনা হয়েছে কয়েক ডজন বিধায়ককেও। তাদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ প্রসঙ্গে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, বিধানসভা ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে এই নির্বাচনী কমিটি তৈরি হয়েছে। আগের অঘোষিত কমিটি থাকলে নিচু স্তরের কর্মীদের রাস্তায় নামানো কঠিন হয়ে পড়ত। কেননা, দু’দিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভোটের সময় ছড়ি ঘোরানো ‘দলবদলুদের’ মানতে না পারার বার্তা রাজ্য নেতাদের কানে পৌঁছেছিল। তারপরই ‘আদি’দের প্রধান্য কায়েমের সিদ্ধান্ত হয়। তা না হলে ‘বাউন্সার’ বসিয়েও ক্ষোভের আগুন চাপা দেওয়া যেত কি না সন্দেহ।
দলীয় সূত্রের খবর, দলের রাজ্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বুধবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। মূলত নয়া রাজ্য কমিটি গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেতেই এই দিল্লি যাত্রা। চলতি সপ্তাহেই বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা হতে চলেছে। তারপর হবে একাধিক জেলা সভাপতি বদল এবং পুরসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ। পর্যায়ক্রমে হতে চলা এই সিদ্ধান্ত ঘিরে পার্টি অফিস ঘোরাওয়ের সম্ভাবনা প্রবল। আর তাই আগেভাগে ‘বাহুবলী’ নিয়োগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দলের এক বিধায়কের দাবি, হেস্টিংসে এরা অনেক ঝড় সামলেছেন। অভিজ্ঞতার দাম দিয়ে তাঁদের হেড কোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে।