কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

পুরসভার কাজের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারের উদ্যোগ তৃণমূলের

November 19, 2021 | 2 min read

রিপোর্ট কার্ড নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার তৃণমূলের, প্রতিকী চিত্র

প্রথাগত নির্বাচনী ইস্তাহার নয়। কলকাতার পুরভোটের আগে বানানো হচ্ছে গত ছ’বছরের ‘রিপোর্ট কার্ড’। সেটি তৈরির জন্য পুরসভার সব বিভাগ থেকে চাওয়া হয়েছে কাজের খতিয়ান। কী কাজ হয়েছে, কী হয়নি, ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কী, তা জানিয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক পুস্তিকা প্রকাশ করবে পুরসভা। সেই পুস্তিকাই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিলি করবে তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন এবং অন্যদিকে পুর উন্নয়ন— এই দ্বিমুখী কৌশলেই কলকাতাবাসীর মন জয় করে বোর্ড দখল করতে আগ্রহী ঘাসফুল শিবির।

পুরসভা সূত্রে খবর, ১২টি বিভাগের কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হবে। মূলত পানীয় জল, আলো, রাস্তা, স্বাস্থ্য, নিকাশি এবং জঞ্জাল অপসারণ, বস্তি উন্নয়নে শহরজুড়ে যে কাজ হয়েছে, সেই তালিকাই ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে চায় শাসকদল। পাশাপাশি যে বড় কাজগুলি বিগত বছরে করা হয়েছে, তার সংক্ষিপ্তসার থাকবে লিফলেটে। যা পুরসভার ফেসবুক পেজ সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যানার লাগিয়ে প্রচার করা হবে। পাড়ায় পাড়ায় লিফলেটও বিলি করবে জোড়াফুল শিবির। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার তৃণমূল বোর্ড তৈরি হওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় ফের মেয়র হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মেয়র পদে আসীন হন ফিরহাদ হাকিম। ২০২০ সালে পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। তবে করোনার কারণে ভোট করার পরিস্থিতি না থাকায় তৈরি হয় প্রশাসক বোর্ড। তারপর প্রায় দেড় বছর অতিক্রান্ত। ফলে, দু’টি পৃথক তালিকা বানানো হচ্ছে। একটিতে থাকবে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সালের কাজের খতিয়ান এবং অন্যটিতে থাকবে ২০১৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উন্নয়নের খতিয়ান। বিশেষ করে উম-পুন ও করোনার ঝাপটা যেভাবে প্রশাসক বোর্ড সামলেছে, সেই বিষয়গুলিরও উল্লেখ থাকছে রিপোর্ট কার্ডে। প্রতিটি ওয়ার্ড পিছু প্রার্থীদের ৫০টি পুস্তিকা দেওয়া হবে।

যদিও, এটা নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের (খড়্গপুর, করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জ) উপনির্বাচনে প্রথম আলাদা আলাদা ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছিল তৃণমূল। প্রতিটি কেন্দ্রের নিজস্বতাকে গুরুত্ব দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সুপারিশে তৃণমূল সেই সময় কেন্দ্রভিত্তিক আলাদা পুস্তিকা প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। পাশাপাশি, গত বছর পুরভোট হতে পারে ধরে নিয়ে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ডভিত্তিক পুস্তিকা বানানো হয়েছিল। তৃণমূলের সংগঠন সম্পর্কে প্রশান্তর সংস্থা আইপ্যাক ইতিমধ্যেই ওয়ার্ড স্তরে একাধিক সমীক্ষা করেছে। সেখানে পুর পরিষেবার নিরিখে অবস্থা যাচাই করা হয়েছে। ফলে কোথায় কী কাজ হয়েছে এবং কোথায় কী কাজ দরকার, তার স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হবে এই প্রচার পুস্তিকায়। দলীয় সূত্র বলছে, গ্রামের পাশাপাশি নগরোন্নয়নে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতাকে পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। স্বভাবতই, পুরভোটে তিলোত্তমার সামগ্রিক উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই বাজিমাত করতে চাইছে তৃণমূল।

তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, বিভিন্ন ওয়ার্ডের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রয়েছে নির্দিষ্ট সমস্যা, দাবি-দাওয়া। বস্তি উন্নয়ন, জঞ্জাল সাফাই থেকে পানীয় জল সরবরাহ সব নিয়েই তৈরি হচ্ছে ওয়ার্ডভিত্তিক ডেটাব্যাঙ্ক। প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সরাসরি আবেদন জানাতেই ওয়ার্ডভিত্তিক পুস্তিকা প্রকাশ করবে তৃণমূল। ভোটের বাজারে জনসংযোগে এই পুস্তিকা সদর্থক ভূমিকা নেবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Municipal Election, #tmc

আরো দেখুন