কৃষি আইন প্রত্যাহার হলেও, প্রতিবাদরত কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে কী ভাবছে সরকার তা এখনও অস্পষ্ট
নরেন্দ্র মোদী সরকার তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল করলেও, এই কয়েক মাসে দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় পুলিশ, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি দায়ের করেছে, সরকার সে বিষয়ে কী ভাবছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সরকার এসব মামলা ফিরিয়ে নেবে নাকি পুলিশ এবিষয়ে তদন্ত জারি রাখবে, চার্জশিট দাখিল করবে তা এখনও অস্পষ্ট।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে, এই মামলাগুলির তদন্ত চলবে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবিরোধী, বেআইনি কার্যকলাপ আইনের ধারাও দেওয়া হবে।
এক পুলিশ আধিকারিকের মতে, রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে কৃষকদের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, সরকার সিদ্ধান্ত নিলে আদালতে হলফনামা দাখিল করে সেগুলি প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ফেব্রুয়ারিতে সংসদকে জানায়, দিল্লিতে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে ৩৯ টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবিষয়ে জানায় যে, দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে যে দিল্লি সীমান্তে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর ২০২০-এর মধ্যে প্রতিবাদকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে ৩৯ টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে যে দিল্লি সীমান্তে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদের সময় তাদের মধ্যে একজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
মন্ত্রক আরও বলেছিল যে কেন্দ্রীয় সরকার তার নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর অবিরাম নজর রাখে এবং জরুরী পরিস্থিতিতে যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংসদকে জানিয়েছে, ‘প্রতিবাদরত কৃষকরা আক্রমণাত্মক, দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছিল এবং সরকারি কর্মচারীদের তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অন্যায়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করেছিল, যার ফলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মীরা আহত হন’।
এদিকে হরিয়ানা সরকার বিধানসভায় জানিয়েছে, যে তিনটি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে ১৩৬ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে রাজ্যের কিছু থানায় পুলিশ আধিকারিকরা প্রায় ১০,০০০ বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সোনেপত জেলায় ২৬ টি, আম্বালায় ১৫ টি এবং কুরুক্ষেত্রে ১৮ টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার একটি বিবৃতি অনুসারে, হরিয়ানায় ২,৫০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যমুনানগর, আম্বালা, কর্নাল, সিরসা, কুরুক্ষেত্র, ঝাজ্জার, সোনেপত ইত্যাদি জায়গায় কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।