সোমবার দিল্লি সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে আগরতলায় রোডশো অভিষেকের
আগামী কাল, সোমবার দিল্লি সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া এবং প্রাপ্য বকেয়া আদায়ে তিনি সরব হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দরবারে। আলোচনায় উঠতে পারে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বিএসএফের কাজের পরিসর বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়টি। একইদিনে বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরায় পা রাখছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরভোটের প্রচারে করবেন রোড শো। ফলে আগামী কাল দিল্লি ও ত্রিপুরার দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের। বাংলায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর জুলাই মাসে দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নভেম্বর মাসে ফের তিনি দেশের রাজধানীতে পা রাখছেন। ২২ তারিখ দিল্লি যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। ফিরবেন ২৫ তারিখ। মুখ্যমন্ত্রীর সফর সম্পর্কে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার জন্য ফের একবার কেন্দ্রের দ্বারস্থ তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্নভাবে বাংলাকে কেন্দ্র বঞ্চনা করে চলেছে, এই অভিযোগ একাধিকবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রীরা।
কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া রয়েছে। সেই দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলি কেন্দ্রকে জানাতে চান মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মমতা সব সময়ই চান, বাংলাকে বিশ্বের দরবারে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলাকে বঞ্চনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে কোন বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে, তা নিয়ে কৌতুহল রাজনৈতিক মহলের।
মনে করা হচ্ছে, বিএসএফের কাজের পরিসর সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএসএফের কাজের পরিসর ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। যা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হয়েছে প্রস্তাব। তার আগে এই সংক্রান্ত বিষয় ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে বিএসএফ সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও কথা হয় কি না, তার দিকেই নজর। তাছাড়া আগের সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে জানিয়েছিলেন, করোনা প্রতিরোধের টিকা বাংলা কম পেয়েছে। ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসতে পারে। এই সফরে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সম্মেলনে বাংলা স্টলের উদ্বোধন করবেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দিল্লি সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে দেশের অ-বিজেপি একাধিক নেতারও। কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে কেন্দ্র কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছে। আলোচনায় উঠে আসতে পারে সেই প্রসঙ্গও। ২০২৪ সালের লক্ষ্যে বিজেপি বিরোধী আন্দোলন মজবুত করতে আরও এগতে চায় তৃণমূল।
অন্যদিকে, পুরভোট নিয়ে সরগরম বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা। সোমবার পুরভোটের প্রচারে আগরতলার রবীন্দ্র ভবন থেকে রোড শো করবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন প্রার্থীরা। শনিবার দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে সোনামুড়াতে প্রচার করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। প্রচার সভা থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, তৃণমূলকে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই বারবার তৃণমূলের উপর আক্রমণ হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে এদিন তৃণমূলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আগরতলা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ইন্দ্রনগরে পথসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। দলীয় প্রার্থী পান্না দেবের সমর্থনে সভায় বক্তব্য রাখতে উপস্থিত হন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক নারায়ন গোস্বামী সহ একাধিক নেতৃত্ব। অভিযোগ, তৃণমূলের সভা মঞ্চের পাশেই ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি তীব্র স্বরে গান বাজাচ্ছিল। সেই সঙ্গে বিজেপির বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়ায়। পুলিসকে বলে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই এক তৃণমূল নেতা ওই গান বন্ধ করতে এগিয়ে যান। তখনই ধস্তাধস্তি বেধে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, এই সময়ই বিজেপির লোকজন তৃণমূলের সভা মঞ্চের লাইট, সাউন্ড বক্সের তার কেটে দেয়। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, রাস্তা কিন্তু এখনও অনেক লম্বা, বিজেপি এটা মনে রাখুক।