একদিনে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেলেন বাংলার ৩ হাজারের বেশি পড়ুয়া
একদিনে তিন হাজারের বেশি পড়ুয়ার হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দিল রাজ্য প্রশাসন। শনিবার বিভিন্ন জেলায় মহকুমা শাসকের অফিসে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। গোটা রাজ্যে মোট ১৭৬টি শিবিরের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বিলি করা হয়েছে। সর্বাধিক কার্ড বণ্টন হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের শিবির নিয়ে মোট ১১ হাজার পড়ুয়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষা ঋণের মঞ্জুরি পেল।
এদিকে, আগামী ১ জানুয়ারি স্টুডেন্টস ডে পালন করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপলক্ষে ওইদিন ২০ হাজার পড়ুয়াকে এই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করল রাজ্য। এই নিয়ে এদিন প্রত্যেক জেলা শাসকের সঙ্গে বৈঠকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। পাশাপাশি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার গতি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাঁচটি মহকুমায় মোট ৪৬৯ জন ছাত্রছাত্রীকে ডাকা হয়েছিল। তার মধ্যে ৪৩২ জন সশরীরে হাজির হলেও, ২৩ জনের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। সব মিলিয়ে এই জেলায় ৬৪৫ জনের ঋণ মঞ্জুর হয়েছে। এই সংখ্যা বাকি জেলার তুলনায় বেশি। মহকুমা শাসকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতে এই কার্ড তুলে দেওয়া হয়। বারুইপুরে যেমন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উলুবেড়িয়ায় স্টলডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বিলির অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়।
এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পাঁচ মহকুমাতেও ক্যাম্প করে আবেদন করা ছাত্রছাত্রীদের হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে এদিন ২৫৬ জন ছাত্রছাত্রীদের হাতে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছাত্রছাত্রী থেকে তাদের অবিভাবকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। হাবরার বনবনিয়ার মনীষা ঘোষ বলেন, বাবা চাষবাস করে রোজগার করেন। বিএসসি নার্সিংয়ের ৪ বছরের কোর্সের এখনও বাকি তিন বছর। বছরে দুটো করে সেমেস্টার। প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। চাষবাস করে সংসার চালিয়ে বাবার পক্ষে এত পরিমান টাকা দেওয়া সম্ভব নয়৷ পেশাগত উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পুরনে মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পে আবেদন করেছিলাম।এদিন জেলাশাসকের হাত থেকে এই সুবিধা পেলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আরেকজন হলেন বারাসতের বড়বড়িয়ার দুর্জয় নাথ। তাঁর বাবা কনক নাথ একজন ছোট ব্যাবসায়ী। ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভর্তি হয়েছেন দুর্জয়।কিন্তু পরিবারের সেই সামর্থ্য নেই পেশাগত শিক্ষার খরচ সামাল দেওয়ার। তিনি বলেন, এদিন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড জেলাশাসক তুলে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগের জন্যই আমাদের মতো অনেকেরই স্বপ্ন পুরন হবে। অন্যদিকে, হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমায় ৪১, কল্যাণী মহকুমায় ৪০ জন পড়ুয়াকে এই কার্ড দেওয়া হয়। হুগলি জেলায় এদিন মোট ১৮৯ পড়ুয়ার হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়া হয়।