বাকি দাবি নিয়ে কৃষকদের চিঠি মোদী সরকারকে, চাপে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা
শুধু জাতির উদ্দেশে ঘোষণাই যথেষ্ট নয়, বাকি দাবির কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটাও দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। আর তাই এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। উদ্দেশ্য, বকেয়া সেই দাবিগুলি সম্পর্কে অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। আর তার জন্য ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার কাজে কী করল, তা ওইদিন পর্যালোচনা বৈঠকে খতিয়ে দেখবেন আন্দোলনকারীরা। তবে কেবল চিঠিতে সবটা সীমাবদ্ধ নয়, আন্দোলনকারী কৃষকরা তাঁদের যাবতীয় প্রতিবাদ কর্মসূচিও বজায় রেখেছেন। সেই লক্ষ্যেই আজ, সোমবার খোদ যোগীরাজ্যে কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত ঘিরে বাড়ছে উত্তাপ। কারণ, সামনে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। এই কর্মসূচি সফল করার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) সর্বভারতীয় নেতা রাকেশ টিকায়েতকে। রবিবার রাতেই তিনি লখনউ চলে গিয়েছেন।
কেন্দ্রের ধারণা ছিল, তিন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণাতেই সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। তা কিন্তু হয়নি। একদিকে অনড় কৃষক, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর আচমকা ঘোষণায় প্রবল ধন্দে পড়ে যাওয়া বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। উপর্যুপরি এই চাপে রীতিমতো অস্বস্তিতে নরেন্দ্র মোদি সরকার। আগামী বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক তাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আসন্ন লোকসভা অধিবেশনে তিন কৃষি আইন বাতিলের বিল আনতে হলে তা আগে মন্ত্রিসভায় পাশ করাতে হবে। তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কৃষকদের বাকি দাবি নিয়েও। বিজেপির অন্দরে-বাইরে ‘বিদ্রোহী’দের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তা কপালে ভাঁজ বাড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
কী সেই সব দাবি? এদিন সিংঘু সীমানায় সর্বভারতীয় কৃষক নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল বলছিলেন, ‘এমএসপি আইন, আইন প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন, কমিটি তৈরির সময়সীমার উল্লেখ চিঠিতে রয়েছে। বিদ্যুৎ বিল, ২০২০ প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছি।’ এছাড়াও চিঠিতে কিষান মোর্চা স্পষ্ট জানিয়েছে, ৭০০ জন শহিদ কৃষকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দিতে হবে। পাশাপাশি স্মৃতিসৌধ বানানোর জন্য সিংঘু সীমানায় জমি দিতে বলা হয়েছে মোদিকে। ওই কৃষক নেতা বলেছেন, ‘আন্দোলনরত কৃষকদের একের পর এক মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে বিজেপি সরকার। প্রত্যেকটি মামলার প্রত্যাহার চাই। লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে গ্রেপ্তার এবং মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্তও করতে হবে। ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত যা পরিস্থিতি থাকবে, তার উপর ভিত্তি করেই পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।’ অর্থাৎ, কৃষকরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে ফের তীব্র করা হবে মোদী বিরোধী আন্দোলন। তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন। আমাদেরও রাস্তায় বসে থাকার শখ নেই। যত দ্রুত আপনি দাবিগুলো পূরণ করবেন, তত দ্রুত আমরা ঘরে ফিরব।’