এবার মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা, উদ্যোগ রাজ্য সরকারের
এবার মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। এমনই পরিকল্পনা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। গ্রামোন্নয়ন দপ্তর একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যার নাম সেবা সখী। আপাতত পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে তিন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বাছাই করা মহিলাদের এই কাজে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সদ্যোজাত থেকে বয়সের ভারে ন্যুব্জ, এমনকী অসুস্থদের দেখভাল, শুশ্রূষার দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হবে। মোদ্দা কথা, এই মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আয়া তৈরি করতে চাইছে সরকার। করোনা পর্বে বহু বাড়িতে রোগীদের ঠিকমতো দেখাশোনার জন্য দক্ষ আয়া অনেক ক্ষেত্রেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই ঘাটতি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে পূরণের ভাবনাচিন্তা করা হয়েছে। প্রথম ধাপ হিসেবে প্রশিক্ষিত আয়ার একটি পুল তৈরি করা হবে। এবার চাহিদা মতো সেখান থেকেই সংশ্লিষ্ট বাড়িতে পাঠানো হবে সেবা সখীদের।
এই তিনটি জেলা হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া। জানা গিয়েছে, জেলাগুলির নির্দিষ্ট ব্লক থেকে ২০ জনের নাম পাঠাতে বলা হয়েছিল। সেই তালিকা জমা পড়েছে। এই কাজের জন্য তিন জেলায় তিনটি সমবায় সংঘকে বাছাই করে জেলা প্রশাসন। মহিলাদের বাছাই করার দায়িত্ব তাদেরই দেওয়া হয়েছিল। যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর ব্লক থেকে যাঁদের নাম পাঠানো হয়েছে, তাঁরা মূলত নতুন এবং এই কাজে আগ্রহী। জেলার এক আধিকারিক বলেন, শিক্ষিত এবং কাজকর্মে পটু, এমন মহিলাদেরই বাছাই করা হয়েছে। বারুইপুর ব্লককে প্রাথমিকভাবে ভাবা হয়েছে, কারণ এখান থেকে বহু মহিলা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যান।
নভেম্বরেই শুরু হবে প্রশিক্ষণ পর্ব। ট্রেনিং শেষ হলে দেওয়া হবে সার্টিফিকেট। পরে এই মহিলারাই তাঁদের ব্লক বা এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্য মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। জেলা আধিকারিকদের মতে, এখন বিভিন্ন জায়গায় আয়া সেন্টার গড়ে উঠেছে। বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে সেখান থেকে আয়া নেয় সংশ্লিষ্ট পরিবার। কিন্তু তাঁরা কতটা দক্ষ বা প্রশিক্ষিত, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
সরকার যদি এই মহিলাদের সেবা, যত্ন, শুশ্রূষা করার আধুনিক প্রশিক্ষণ দেয়, তাহলে প্রচুর মানুষ উপকৃত হবেন এবং ভালো মানের পরিষেবা পাবেন। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আরও একটি জীবিকার পথ খুলে যাবে। এই কাজে পারিশ্রমিক হিসেবে একজন মহিলা কত টাকা পাবেন, তা ঠিক করবে জেলা প্রশাসন।
জেলায় যে সমবায় সঙ্ঘকে বাছাই করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগযোগ করলেই পাওয়া যাবে এই প্রশিক্ষিত আয়াদের। তবে এক জেলার আয়া অন্য জেলায় গিয়েও কাজ করতে পারবেন বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। জানা গিয়েছে, গ্রামোন্নয়ন দপ্তর একটি এজেন্সিকে এই প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দিতে চলেছে।