ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল, তৃতীয়বার ইস্তফা জেলা সভাপতির
বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পর থেকেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নানা চিত্র সামনে আসছে। শান্তিপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরে পদ ছাড়তে চেয়ে মঙ্গলবার দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিঠি দিলেন বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তী। তবে তিনি অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। এর আগেও তিনি দু’বার পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন। তবে কোনও বারই তা গৃহীত হয়নি। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অশোকই দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি থেকে যান।
এ বারের পদত্যাগের কারণ কী? তাহেরপুর নেতাজি হাইস্কুলের ইংরেজির মাস্টারমশাই অশোক বলেন, “শান্তিপুরে ভাল ফলের আশা করা হয়েছিল। তা হয়নি। সেই দায় মাথায় নিয়েই সরে যাচ্ছি।” তবে অশোকর ইস্তফা এ বারও রাজ্য নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। সুকান্তর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “অমি একটা বৈঠকে আছি।” রাজ্য বিজেপির তরফে নবদ্বীপ জ়োনের পর্যবেক্ষক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বলেন, “অশোক চক্রবর্তীর পদত্যাগপত্র আমি পাইনি। তাঁকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি।”
বিজেপির একটি অংশের অবশ্য মত, পদত্যাগের কারণ হিসাবে অশোক যা-ই বলুন, আসলে দলের অন্দরে তাঁকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছিল। একাধিক জনপ্রতিনিধির সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে অশোকের। যা নিয়ে তাঁর আগে থেকেই অভিমান এবং অসন্তোষ ছিল। এক সময়ের এসএফআই কর্মী অশোক বিজেপিতে যোগ দেন ১৯৯৫ সাল নাগাদ। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকার ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে গেলে মানবেন্দ্র রায়কে ওই জেলার সভাপতি করে দল। দলের অন্দরের সমীকরণে তিনি জগন্নাথের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা। ২০১৯-এর ডিসেম্বরে জেলা সভাপতি হন জগন্নাথের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অশোক। ফলে জেলা সংগঠনের রাশ ফের জগন্নাথের হাতেই ফিরে যায়। এর পরে দলের অন্দরে ক্ষমতার বিন্যাস এবং নানা অভ্যন্তরীণ সমীকরণে জগন্নাথের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় অশোকের। সেটাও তাঁর পদত্যাগের কারণ হতে পারে বলে বিজেপির একাংশ মনে করছেন।
অধুনা রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ অবশ্য বলেন, “এটা সাংগঠনিক বিষয়। দলের নেতৃত্ব বলতে পারবেন। আমি জনপ্রতিনিধি। সাংসদ হওয়ার পর থেকে সাংসদের কাজ নিয়েই আছি।”