আজ কলকাতা হাইকোর্টে কলকাতা ও হাওড়ার ভোটভাগ্য
একদিকে হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষা, অন্যদিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারের গড়িমসি। এই দুইয়ে মিলে আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। গোটা রাজ্যের পুরভোট একসঙ্গে করানোর দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। মঙ্গলবারই রাজ্য সরকার হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে দু’টি পুরসভার ভোট আগে করানোর যুক্তি পেশ করেছে। তাতে নবান্ন জানিয়েছে, এই দুই পুর এলাকায় টিকাকরণের হার সন্তোষজনক। সেই কারণেই এখানে ভোট করা যেতে পারে। তবে ধাপে ধাপে সব পুরসভার নির্বাচনই হবে। সেই লক্ষ্যে দ্রুত টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। আর যেহেতু ভোট ইভিএমে হবে, তার জন্যও পর্যায়ক্রমে ভোট করানো জরুরি। কারণ, একসঙ্গে গোটা রাজ্যে ভোট করার মতো ইভিএমের সংস্থান নেই। আজ, বুধবার হাইকোর্টে শুনানি। সেখানেই নির্ধারিত হবে মহানগরীর ১৪৪টি ওয়ার্ডের ভোটভাগ্য।
তবে, হাওড়ার ভোট কলকাতার সঙ্গে হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে রাজ্যপালের পদক্ষেপে। বালি পুরসভাকে হাওড়া পুরনিগম থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে যে সংশোধনী বিল বিধানসভায় আনা হয়েছিল, তাতে সই করেননি রাজ্যপাল। ফলে ৫০টি ওয়ার্ড নিয়ে রাজ্য সরকার হাওড়া পুরসভার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারছে না।
উল্টে এদিনই আবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে রাজভবনে ডেকে তাঁকে নবান্নের ‘অনুসারী’ না হওয়ার পাঠ দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীশ ধনকার। তাঁর নির্দেশ, একযোগে সব পুরসভার ভোট করুন। এখানেই অবশ্য শেষ নয়, কড়া একটা চিঠিও তিনি লিখেছেন সৌরভবাবুকে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল কংগ্রেস সাফ অভিযোগ করেছে, রাজ্যপাল বিজেপির সুরে তাল দিচ্ছেন। তাঁকে একযোগে কটাক্ষবাণে বিঁধেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পার্থর খোঁচা—‘সুকান্ত মজুমদার? নাকি রাজভবনের বাসিন্দা? কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি, বোঝা মুশকিল। বিধানসভায় গৃহীত প্রস্তাবকে এভাবে আটকে রাখাটা গণতন্ত্রের পক্ষে অমর্যাদাকর। অবিলম্বে ওই বিল সই করে ছেড়ে দেওয়া উচিত।’ ফিরহাদ বলেছেন, ‘রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সংবিধান শেখাচ্ছেন, আর নিজে তা ভঙ্গ করছেন।’ তাঁর তির্যক মন্তব্য—‘আগে বাংলা যা ভাবত, গোটা দেশ তা পরে ভাবত। আর এখন বিজেপি যা ভাবে, পরের দিন রাজ্যপাল তাই ভাবেন!’
রাজ্যপাল হাওড়া পুরসভার বিলে সই না করলে শুধু কলকাতার পুরভোটের বিঞ্জপ্তি জারি হতে পারে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কমপক্ষে ভোটের ২৪ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়। সেই মতো ১৯ ডিসেম্বর ভোট করতে হলে সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। তাই আজ হাইকোর্টের দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।