আজ দিল্লিতে মমতা-মোদী বৈঠক, উঠতে পারে ত্রিপুরা হিংসা ও বিএসএফ ইস্যু প্রসঙ্গ
ছ’মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার। আজ, বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রেক্ষাপট? একদিকে উত্তপ্ত ত্রিপুরায় বারংবার তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আঘাত। আর অন্যদিকে, বিএসএফের কাজের সীমা বাড়ানোর বিতর্কিত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। এই দুই ইস্যুতেই দেশের রাজনীতি উত্তাল হয়েছে… অলিখিতভাবে যার নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নোট বাতিল থেকে সিএএ, কিংবা হালের কৃষি আইন—মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বাকি বিরোধী নেতানেত্রীদের অনেকটাই পিছনে ফেলেছেন তিনি। তাই ত্রিপুরায় হিংসা এবং বিএসএফ ইস্যুর উত্তপ্ত আবহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের। মমতার ক্ষোভ, বিএএসএফের পরিধি বাড়িয়ে ঘুরপথে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার এক্তিয়ারে হাত বাড়াতে চাইছে কেন্দ্র। এটা তারই প্রথম পদক্ষেপ। অন্যদিকে, ত্রিপুরায় শক্তিশালী হয়ে ওঠা তৃণমূলকে ঠেকাতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে বিজেপি। এই দুই উত্তপ্ত ইস্যুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নেত্রীর মূল এজেন্ডা। একইসঙ্গে বাংলাকে আর্থিক বঞ্চনা ও রাজ্যের নাম বদলের সিদ্ধান্ত আটকে রাখার বিষয়েও মোদীর হস্তক্ষেপ চাইবেন তিনি। ফলে, মোদী বনাম মমতার সংঘাতের আবহ তীব্র।
মঙ্গলবারও তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘বিজেপিকে হারানোই মূল লক্ষ্য।’ তবে, মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে যাবতীয় কৌতূহলকে ছাপিয়ে যাচ্ছে মমতার একের পর এক রাজনৈতিক চমক। ত্রিপুরা ও গোয়ার পর এবার মমতার লক্ষ্য হরিয়ানা-বিহার। মঙ্গলবার একসঙ্গে তিন জাতীয় রাজনীতির ব্যক্তিত্ব যোগ দিলেন তৃণমূলে। তার মধ্যে দু’জনই কংগ্রেস নেতা। কীর্তি আজাদ এবং অশোক তানওয়ার দুজনেই কংগ্রেসের। পাশাপাশি সংযুক্ত জনতা দলে একদা নীতীশ কুমারের বিশ্বস্ত পবন বর্মাও মমতার হাত ধরে যোগ দিলেন তৃণমূলে। এই তিনটি দলবদলের বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকট হচ্ছে। অশোক তানওয়ার হরিয়ানার অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। তিনি কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি পর্যন্ত ছিলেন। কীর্তি আজাদ বিহারের উচ্চবর্ণের মুখ। অর্থাৎ গোয়া অথবা হরিয়ানা—কংগ্রেসের একের পর এক জনপ্রিয় ও প্রভাবশালীদের টেনে নিচ্ছে তৃণমূল। শুধু যে বিক্ষিপ্তভাবে কংগ্রেসের নৌকা ছাড়া নয়, গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। কংগ্রেস নেতা মনীশ তেওয়ারি তাঁর সদ্য প্রকাশিত বইয়ে লিখেছেন, ২৬/১১ মুম্বই হামলার জবাব পাকিস্তানকে দেওয়া উচিত ছিল। ইউপিএ সরকার পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে কংগ্রেস। যে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা দলের সংগঠন নিয়ে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়েছিলেন, মনীশ তাঁদের অন্যতম। সব মিলিয়ে কংগ্রেসের সঙ্কট বাড়ছে। আর ঠিক সেই সময়েই বিভিন্ন রাজ্য থেকে কংগ্রেস নেতারা যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। মমতা আরও দু’দিন আছেন দিল্লি। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কি আরও কিছু চমক?