পুরভোট শুরু হতেই রক্তাক্ত হয়ে উঠল ত্রিপুরা, বাড়ি ভাঙচুর মারধর বিরোধীদের
আগেই সব বুথ স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। সকালে ত্রিপুরায় পুরভোট শুরু হতেই তা রক্তাক্ত হয়ে উঠল। বেশ কয়েকজনের মাথা ফাটল। তার জেরে জামা রক্তাক্ত হয়ে উঠল। ভয়ে গলা কাঁপছে ভোট দিতে আসা মানুষজনের। রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেল মনোজ চক্রবর্তীকে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের পোলিং এজেন্ট। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘একদল দুষ্কৃতী আমাকে আঘাত করতে করতে নিয়ে যায়। পুলিশ প্রায় নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয়। দুটি সেলাই পড়েছে মাথায়। সিটি স্ক্যান করারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।’ আগরতলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শ্যামল পালের দাবি, তাঁর দোকান–বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
গতকাল নয়াদিল্লিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন, ‘ত্রিপুরায় এসব কী হচ্ছে? গণতন্ত্র নেই নাকি? যখন তখন যাকে তাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আপনি একটু দেখুন।’ তারপরই আজ ত্রিপুরায় পুরভোট শুরু হতেই রক্তের হোলি খেলা শুরু হযে গিয়েছি বলে মানুষজনের অভিযোগ। পুরভোটের আগেই প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে বিজেপি। বাকি আসনগুলিতে লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, আমবাসায় ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের প্রার্থী স্বপ্না পালের বাড়িতে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আগরতলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শ্যামল পালের বাড়িতে বিজেপি হামলা চালিয়েছে।
এখানে এবার প্রথম পুরভোটে আধা সামরিক বাহিনী নামাতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও সন্ত্রাস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিলোনিয়ায় সিপিআইএম প্রার্থীর বাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেছেন, ‘নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্টু করা যায় তাহলে বিজেপি হেরে যাবে।’ যদিও তিনটি হামলার সঙ্গে তাদের যোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, রাজ্যের ৬টি নগর পঞ্চায়েত, ৭টি পুরপরিষদ এবং আগরতলা পুরনিগমের মোট ২২২টি আসনের জন্য ৬৪৪টি বুথে হচ্ছে ভোটগ্রহণ। তার মধ্যে ৩৭০টি ভোটকেন্দ্রকে অতি স্পর্শকাতর এবং ২৭৪টি ভোটকেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অতি স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রগুলিতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। আগরতলার ভোটকেন্দ্রগুলিতেও নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু বুথের বাইরেই হচ্ছে মারধর, হামলা, সন্ত্রাস।