তৃণমূলের উত্থানে ভীত বিজেপি, গোয়ায় বাংলা নিয়ে মিথ্যাচার জেপি নাড্ডা়র
উত্তরাখণ্ডের পর গোয়া। বিজেপির মুখে রাজ্যে রাজ্যে বাংলার বদনাম অব্যাহত। বিজেপি কি জাতীয় স্তরে তৃণমূলের উত্থানে ভীত? পশ্চিমে গোয়া। উত্তর পূর্বে ত্রিপুরা ও মেঘালয়। উত্তরে হরিয়ানা। একের পর এক রাজ্যে তৃণমূলের পা রাখার পর্ব নিয়ে প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ভিন রাজ্যে তৃণমূলের শাখা বিস্তারের প্রয়াস আগেও হয়েছে। কিন্তু সেই প্রয়াসগুলি ছিল প্রতীকী। এতদিন সেভাবে দানা বাঁধতে পারেনি সেই উদ্যোগ। ২০২১ সাল সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। মেঘালয়ে তৃণমূল প্রধান বিরোধী দলে পরিণত। ২০২৩ সালে এই রাজ্যে ত্রিপুরার সঙ্গেই ভোট। সুতরাং, কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়পক্ষই উদ্বিগ্ন। একের পর এক রাজ্যে তৃণমূলের শাখা তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রভাবশালী হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে চলেছে। আঞ্চলিক দলের তকমা পেরিয়ে আক্ষরিক অর্থেই অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস নামক দলকে রাজনৈতিকভাবে জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় দল ভারতীয় জনতা পার্টি যে তৃণমূলের জাতীয় স্তরে আগমনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে, তার প্রমাণ দিলেন খোদ দলের সভাপতি।
গোয়ায় আগামী বছর বিধানসভা ভোট। কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রচার প্রস্তুতি শুরু করেছে। কিন্তু দু’দিনের গোয়া সফরে যাওয়া বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা বৃহস্পতিবার প্রথম থেকেই আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে টার্গেট করেছেন তৃণমূলকে। কংগ্রেস কিংবা গোয়ার কোনও আঞ্চলিক দল নয়। নাড্ডার ভাষণে বৃহস্পতিবার বারংবার উঠে এসেছে তৃণমূলকে প্রতিরোধ করার মরিয়া আহ্বান। আর রাজনৈতিক প্রচারের পরিবর্তে আবার তিনি অস্ত্র করেছেন বাংলার বদনামকেই।
নাড্ডা বলেন, হঠাৎ কিছু নতুন দলের আগমন ঘটেছে গোয়ায়। তৃণমূল তাদের অন্যতম। আম আদমি পার্টিও আছে। যেভাবেই হোক তৃণমূলকে ঠেকাতে হবে কোনওভাবেই যেন তৃণমূল জয় না পায়। নাড্ডা এরপর আরও সরাসরি বাংলা নিয়ে অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছেন। বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন? বাংলায় উন্নয়ন হয়নি। আগুন জ্বলছে। তাই গোয়ায় তাদের কোনও সুযোগ দেওয়া চলবে না। গোয়ায় জয় নিয়ে বিজেপির আত্মবিশ্বাস এবার টালমাটাল।
২০১৭ সালে গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস হয়েছিল সর্ববৃহৎ দল। ১৭টি আসনে জয়ী হয় কংগ্রেস। বিজেপি ১৩ আসনে জয়ী হয়েছিল। অর্থাৎ স্বাভাবিক নিয়মে বিজেপির সরকারের পতন ছিল অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে এনডিএ জোটের সরকার গঠন করে বিজেপি। সুতরাং, এবার বিজেপি পুনরায় সরকার গঠন করতে পারবে কি না সেটা নিয়ে এখন থেকেই দলে সংশয় রয়েছে। এই অবস্থায় তৃণমূল গোয়ায় পা রেখেছে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা লুইজিনহো ফেলেইরোকে দলে যোগদান করিয়ে। লুইজিনহো সাতবারের বিধায়ক এবং দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী। যথেষ্ট প্রভাবশালী। স্বাভাকিভাবেই কংগ্রেস একা নয়, উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরেও। সেই উদ্বেগেরই বহিঃপ্রকাশ নাড্ডার গোয়ায় এসে তৃণমূলকে আক্রমণ! অর্থাৎ ভোট ঘোষণার অনেক আগেই গোয়ায় তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।