আগামী বছর মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ণ কীভাবে হবে জানাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
ফের মিলেছে কোভিডের নয়া স্ট্রেন। আবার দেখা দিয়েছে তার চোখ রাঙানোর আশঙ্কা। শিক্ষামহলে জোর চর্চা, ফের বন্ধ হয়ে যাবে না তো স্কুল? তাহলে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ণ কীভাবে হবে। অন্যতম সমাধান টেস্ট পরীক্ষা। যদি একান্তই রাজ্যের দুই মেগা পরীক্ষা করানো সম্ভব না হয়, তাহলে টেস্ট–এ পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে বিকল্প মূল্যায়ন হবে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর। চলতি সপ্তাহে মাধ্যমিক টেস্ট–এর সূচি প্রকাশ করবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে স্কুলগুলি নিজেদের সুবিধে মত ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসে টেস্ট নেবে।
কোভিডের কারণেই সিবিএসই এবং সিআইএসই–র মত সর্বভারতীয় বোর্ড এবার আগে থেকে দশম ও দ্বাদশের চূড়ান্ত পরীক্ষা দুই ধাপে করাচ্ছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সিবিএসই–র দশমের প্রথম ধাপের পরীক্ষা। কেন্দ্রীয় এই বোর্ডের দ্বাদশের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বুধবার।
অন্যদিকে, আগামী বছরের ৭ থেকে ১৬ মার্চ হবে মাধ্যমিক। ২ এপ্রিল শুরু উচ্চমাধ্যমিক। শেষ হবে ২০ এপ্রিল। উচ্চমাধ্যমিকের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ। এ রাজ্যে প্রতি বছর মাধ্যমিকে বসে গড়ে ১২ লক্ষ পড়ুয়া। উচ্চমাধ্যমিকে বসে ৮ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। গত বছরের মত এবারও যদি কোভিডের উপদ্রব দেখা দেয় তাহলে কী হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। টেস্ট পরীক্ষা কবে তা জানতে চান সবাই।
পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “মাধ্যমিকের টেস্ট হবে। দু’এক দিনের মধ্যে আমরা স্কুলগুলিকে সূচি জানিয়ে দেব।” টেস্টের প্রশ্ন ছাপানো, খাতা দেখা এবং প্রত্যেক পড়ুয়ার খাতা সযত্নে গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব স্কুলের। কোভিডের কারণে মাধ্যমিক না হলে মূল্যায়ণে টেস্টের নম্বর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। তখন কোনও গরমিল দেখলে টেস্টের উত্তরপত্র চেয়ে পাঠাবে পর্ষদ। সংসদ থেকে উচ্চমাধ্যমিক প্র্যাকটিক্যালের কোনও প্রশ্ন স্কুলে যাচ্ছে না। কোভিড বিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া ও নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব স্কুলের। মূল্যায়নের পর স্কুলগুলি নম্বর পাঠাবে সংসদে। সংসদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “টেস্ট পরীক্ষা কবে নেওয়া হবে তা আমরা চাপিয়ে দেব না। স্কুল কর্তৃপক্ষ সুবিধে মত টেস্ট পরীক্ষা নেবে।”
উল্লেখ্য, আগামী বছর নিজের স্কুলেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে ছাত্রছাত্রীরা। মাধ্যমিক আগের মতই হবে অন্য ভেন্যুতে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি–মার্চে অল্প কিছুদিন বাদ দিলে করোনার কারণে প্রায় বছর দু’য়েক স্কুলমুখো হয়নি পড়ুয়ারা। ১৬ নভেম্বর থেকে ফের শুরু হয়েছে ক্লাস। কিন্তু স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি নিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা হতাশ। মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ স্কুলে আসছে না। এক্ষেত্রে পর্ষদের বক্তব্য, সরাসরি না হলেও অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। মাধ্যমিকের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
করোনার খুব বাড়াবাড়ি না হলে আগামী বছর আগের মত খাতা–কলমে পরীক্ষা হবে। বাড়বে ভেনু্যর সংখ্যা। মাধ্যমিক হবে সকাল ১১.৪৫ থেকে বিকেল তিনটে। উচ্চমাধ্যমিক চলবে সকাল দশটা থেকে দুপুর ১.১৫। একইদিনে স্কুলে হবে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। দুই ক্ষেত্রেই সিলেবাসের বোঝা কমিয়েছে সংসদ।