দেশ বিভাগে ফিরে যান

সংসদে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের পাশে তৃণমূল

December 2, 2021 | 2 min read

ভারতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালীন সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংসদের খবর সংগ্রহ করা ও সম্প্রচার করা, এটাই দেশের ঐতিহ্য। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার সংসদের অন্দরে সংবাদমাধ্যমকে সীমিত পরিসরে সংবাদ সংগ্রহের নির্দেশিকা জারি করেছে। যা কেন্দ্র সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের পরিচয় দেয়। এহেন পরিস্থিতিতে সাংবাদমাধ্যমের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের পরিসরকে নিয়ন্ত্রিত করে দেওয়ার এই ফতোয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সংসদীয় দল সংবাদমাধ্যমের পাশে থাকা বার্তা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং সংসদে গণমাধ্যমের পূর্ন স্বাধীনতার পক্ষে তাঁরা। সেই মর্মে দিল্লির প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের হাতে তৃণমূলের বার্তা তুলে দেওয়া হল।

এই বার্তায় দেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র হল সংসদ। সংসদ সংক্রান্ত খবর পরিবেশন করা দেশের ঐতিহ্য। স্বাধীন, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সংবাদমাধ্যম দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।


গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে, সংসদে ফের সংবাদমাধ্যমের কাজের পরিসর আগের মতো উন্মুক্ত করার দাবিও জানিয়েছে তৃণমূল। বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে, তৃণমূল দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গেও সকলকে এক সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়াও, আজ তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েন ও সুস্মিতা দেব সংসদ টিভিকে সেন্সর না করার অনুরোধ রাখেন। এরা ব্যাখ্যা করেন যে একাধিক ক্যামেরা থাকে সত্বেও যে ক্যামেরা চেয়ার বা বিজেপির সাংসদদের দেখায়, সেগুলোই চালু থাকছে, বাকি সব বাদ . সংসদকে ‘গুপ্তকক্ষ’ বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

কথায় বলে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হল সংবাদমাধ্যম। সাধারণ মানুষের কথা বলা থেকে শুরু করে জনমত তৈরি করা, একটি দেশকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে দেশের সংবাদমাধ্যম। এবার সেই সংবাদমাধ্যমের উপরেই নেমে এল আঘাত। সংসদে সংবাদমাধ্যমের কাজের গতবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার। যদিও বিজেপি আমলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নতুন কিছু নয়। এর আগেও একাধিকবার দেশের নানান প্রান্তে নানা ভাবে সংবাদমাধ্যম আক্রান্ত হয়েছে। অতিসম্প্রতি ত্রিপুরাতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন সংবাদকর্মীরা। তবে এবারের ঘটনা খুবই বিরল, যা দেশের ঐতিহ্যবাহী সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের ১৮০ টি দেশের মধ্যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকের নিরিখে ভারতের স্থান ১৪২। বিগত দু-বছরে ১৩৬ থেকে নেমে ১৪২-এ পৌঁছেছে ভারত। যার নেপথ্যে রয়েছে দেশে সংবাদমাধ্যমের উপর লাগাতার আক্রমণ, সংবাদকর্মীদের শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করার মতো একাধিক অভিযোগ। এগুলোই ক্রমশ ভারতের গণতান্ত্রিক পরিসরে আঘাত আনছে। দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করছে, তখন দেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর এহেন আক্রমণ নেমে আসা কখনই কাঙ্ক্ষিত নয়। এমতাবস্থায় সংবাদমাধ্যমের পাশে দাঁড়িয়ে সকলেকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাল তৃণমূল কংগ্রেস।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Parliament, #tmc, #Derek O Brien, #media, #press club of india

আরো দেখুন