পৌষমেলায় না বিশ্বভারতীর, পরিবর্ত হিসাবে হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করছে রাজ্য সরকার
টানাপোড়েনের ইতি। এবছর শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা (Poush Mela) হবে না। তার পরিবর্তে শিবপুর মৌজার গীতবিতান মঞ্চে হবে হস্তশিল্প মেলা (Handicrafts)। এবং তা পৌষমেলার সময়েই। শনিবার এলাকা পরিদর্শন করে নতুন মেলার কথা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। তিনি জানান, ডিসেম্বরের ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে হস্তশিল্প মেলা। স্থানীয় হস্তশিল্পীদের কাজ তুলে আনতে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সাহায্যে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ বলে জানালেন মন্ত্রী। সরকারের এই উদ্যোগে সকলে খুশি হলেও পৌষমেলার ভবিষ্যৎ যে বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে, তা বুঝছেন সকলেই। তবে কি পৌষমেলা বন্ধই হয়ে যাবে? এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে সকলের মনে।
শনিবার বোলপুরের (Bolpur) ক্ষুদ্র বাজার এলাকাটি ঘুরে দেখেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থির হয়, এবছর ক্রিসমাসে এখানেই হস্তশিল্প মেলা হবে। ২৩ থেকে ২৬ ডিসেম্বর এই মেলার আয়োজন করবে রাজ্য সরকার। এটা শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার বিকল্প হিসেবে দেখা যেতে পারে। পরে সংবাদমাধ্যমে তিনি হস্তশিল্প মেলার কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বোলপুরে এমন অনেক ছোট ছোট গ্রাম আছে, যেখানে ঘরে ঘরে দারুণ হাতের কাজ হয়। তবে সেসব শিল্পীদের প্রতিভা প্রচারের আলোয় আসার খুব একটা সুযোগ নেই। তাই তাঁদের জন্য প্রতি বছর ডিসেম্বরে গীতবিতান মঞ্চে হস্তশিল্প মেলা হবে। তাতে স্থানীয় স্তরে ব্যবসাও ভাল হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।
তবে তাঁর এই ঘোষণায় পৌষমেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। তবে কি আর পৌষমেলা হবে না? ধীরে ধীরে শান্তিনিকেতন থেকে উঠেই যাবে কবিগুরুর সাধের এই মেলা? তার রাস্তা প্রশস্ত করতেই কি রাজ্য সরকার নিজের হাতে হস্তশিল্প মেলার দায়িত্ব নিল? এসব প্রশ্ন খুব একটা অবান্তর নয়। প্রথম থেকেই পৌষমেলার আয়োজক বিশ্বভারতী (Visva Bharati) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা আয়োজনে নারাজ। ঘনিষ্ঠ মহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বিদ্যুৎ উপাচার্য জানিয়েছেন, কোটি টাকা খরচ করে পৌষমেলা আয়োজন তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে ধীরে ধীরে হয়ত বন্ধের পথেই ঐতিহ্যবাহী মেলা।