চা সুন্দরী প্রকল্পে ঘর দেখে খুশি তোর্সা বাগানের শ্রমিকরা
বাগানের জরাজীর্ণ ভাঙাচোরা আবাসনে থাকার কষ্টের দিন শেষ। নতুন বাড়ির কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। আর মাত্র কিছুদিন সময়ের অপেক্ষা। তারপরেই চা শ্রমিকরা ভাঙাচোরা আবাসন ছেড়ে আশ্রয় নেবেন রাজ্য সরকারের ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পের ঝা চকচকে ঘরে। বাগানের জমিতেই তৈরি হচ্ছে সরকারি ওই প্রকল্পের ঘর। এখন শুধু বাকি বিদ্যুতের সংযোগ, নিকাশি নালা, পানীয় জল ও রাস্তাঘাট বানানোর কাজ। কিন্তু আর তর সইছে না বাগানের ফ্রান্সিস গুড়িয়া, সালামি মুণ্ডা, অনীতা মুণ্ডাদের। সালামি, অনীতারা দিন গুণছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের ওই প্রকল্পের ঘরে কবে যাবেন। প্রথমে কংগ্রেস ও পরে বামআমলে যা সম্ভব হয়নি তৃণমূল সরকারের জমানায় পাকা বাড়িতে থাকার সেই স্বপ্নই আর কয়েকদিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। কালচিনির তোর্সা বাগানে চা সুন্দরী প্রকল্পে ঘর তৈরির কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউসিং ডিপার্টমেন্ট এই ঘর তৈরির কাজ করছে। চা শ্রমিকদের থাকার জন্য তোর্সা বাগানে মোট ৪৭৬টি ঘর বানানো হচ্ছে। বাগানের জমিতেই ঘরগুলি হচ্ছে। তোর্সা বাগানের ফ্যাক্টরির পাশের জমিতে ২০০টি ঘর করা হচ্ছে। বাগানের অন্য আর একটি জমিতে তৈরি হচ্ছে বাকি ২৭৬টি ঘর।
কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, চা সুন্দরী প্রকল্পে ব্লকের একটি চা বাগানেই এই ঘর তৈরির কাজ চলছে। শ্রমিকরা ঘর পাবেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে খুলেছে তোর্সা চা বাগান। বাগানে ১০০০ হাজারের মতো শ্রমিক ছিলেন। বাগান বন্ধ থাকায় প্রচুর শ্রমিক কাজের খোঁজে বাইরে চলে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কিছু শ্রমিক ফিরে এলেও অনেকে এখনও ভিনরাজ্য থেকে ফেরেননি। বর্তমানে বাগানে ৬০০’র কাছাকাছি শ্রমিক আছেন। চা সুন্দরী প্রকল্পে ঘর তৈরির কাজ অনেকটাই হয়ে যাওয়ায় বাগানের ৩ নম্বর লাইন, মায়লা লাইন, বানঠা লাইন ও শাওনা লাইনে শ্রমিকদের মধ্যে খুশির বাতাস বইছে। ৩ নম্বর লাইনের সালামি মুণ্ডা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। অনীতা মুণ্ডা বলেন, আমরা চা শ্রমিক। জন্ম থেকেই বাগানের ভাঙাচোরা ঘরে থাকি। আমাদের জন্য পাকা ঘর হবে ভাবতেই পারছি না। আমাদের মাথার ছাদ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চা সুন্দরী প্রকল্পের নির্মীয়মাণ ঘরগুলিতে এখন রং করা হচ্ছে। এরপর ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সংযোগ, পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা, নিকাশি নালা তৈরির কাজ হবে। শিশু উদ্যানও বানিয়ে দেওয়া হবে। সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে বসবে হাট, বাজারও।