রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও বৃষ্টি হবে পশ্চিমবঙ্গে

December 5, 2021 | 2 min read

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে আজ, রবিবার বৃষ্টি চলবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই। ঝোড়ো বাতাস বইবে উপকূল অঞ্চলে। তবে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নয়। শুক্রবার মধ্যরাতে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় ‘জওয়াদ’ দ্রুত শক্তি হারাচ্ছে। ওড়িশার উপকূল বরাবর এসে পুরীর কাছে সেটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অভিমুখে বেঁকে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে আসার কথা ছিল। এই যাত্রাপথে তা আরও শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হত। কিন্তু শনিবার দেখা যায়, যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়েও দ্রুত শক্তি হারাচ্ছে ‘জওয়াদ’। গতিপথ ও অভিমুখ অপরিবর্তিত থাকলেও শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানকালে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এদিন সন্ধ্যায় আবহাওয়া দপ্তর জানায়, এটি আরও দুর্বল হয়ে রবিবার সকালের দিকে নিম্নচাপ হিসেবে পুরীর কাছে অবস্থান করবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ‘জওয়াদ’ ওড়িশা উপকূল বরাবর বাংলার দিকে দিকে আসবে। এই পথে তা আরও শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপ বলয়ে পরিণত হবে। ফলে এ রাজ্যের উপকূল অঞ্চলে ঝোড়ো বাতাস বইলেও বিধ্বংসী ঝড়ের কোনও আশঙ্কা নেই। বাতাসের গতি থাকতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। উপকূলে সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার হতে পারে বাতাসের গতি। তবে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে আজ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। কলকাতা, হাওড়া সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে আজ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

কাল, সোমবার নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। অর্থাৎ মাঠভর্তি ফসল নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা। সেই ক্ষয়ক্ষতি কমাতে অবশ্য দিন তিনেক আগে থেকেই সক্রিয় হয়েছে কৃষি দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনগুলি। 

কিন্তু এভাবে ‘জওয়াদ’-এর শক্তিক্ষয়ের কারণ কী? আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশ দাস বলেন, উপকূল বরাবর অর্থাৎ স্থলভাগ সংলগ্ন অবস্থায় আসার সময় স্বাভাবিকভাবেই ঝড়ের শক্তি কমে যায়। তাছাড়া বছরের এই সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা কম থাকে। সেই কারণে ঘূর্ণিঝড় জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে পারে না। উত্তুরে হাওয়া থাকার জন্যও দ্রুত শক্তি হারায় ঘূর্ণিঝড়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।  


তবে এরপরও শনিবার সকাল থেকে প্রশাসনের প্রস্তুতি ও তৎপরতায় কোনও কমতি চোখে পড়েনি। বিপর্যয় মোকাবিলায় এদিন নবান্ন ও জেলায় ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড সেন্টার খোলা হয়েছে। রাতের মধ্যে মোট দেড় লক্ষ মানুষকে সরানো হবে বলে নবান্নের একটি সূত্র জানিয়েছে। সেচ, বিদ্যুৎ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের ছুটি মঙ্গলবার পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব কন্ট্রোলরুমে ঘনঘন পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন। 


শনিবার ভোররাত থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় হাল্কা বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যায়। জেলায় জেলায় এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ টিম পৌঁছে গিয়েছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়। দীঘা লাগোয়া উপকূলবর্তী এলাকা থেকে প্রায় চার হাজার মানুষকে সরায় জেলা প্রশাসন। দীঘা, বকখালিতে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয়নি। তবে হুগলির চুঁচুড়া থেকে নৈহাটির ফেরি পরিষেবা সকালে কিছুক্ষণের জন্য চালু করে আচমকা বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েন বহু মানুষ। শহর ও মহানগরে বিদ্যুতের খুঁটি, বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে নজরদারি বাড়িয়েছে প্রশাসন। হাওড়ার গঙ্গার ঘাটগুলিতে এনডিআরএফ এদিন সকাল থেকেই তৎপর ছিল।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #jawad, #jawad cyclone, #cyclone alert

আরো দেখুন