বুঝে নেওয়া যাবে মন, চব্বিশের লক্ষ্যে কলকাতা পুরভোটে যে পথে এগোচ্ছে তৃণমূল
চব্বিশে লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে কলকাতা পুরভোট তৃণমূলের কাছে যেন মিনি ভারতবর্ষের ভোট। কারণ কলকাতা জুড়ে বসবাস করেন একাধিক ভাষা-ভাষীর মানুষ। একাধিক রাজ্যের মানুষ থাকেন। এই ভিন্ন ভাষা-ভাষী মানুষের কাছেই নজরে কলকাতার অবাঙালি ভোটকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে তৃণমূল।
২০২১ এর বিধানসভা ভোটের ফলাফল অনুযায়ী কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩১ ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল শাসক দল তৃণমূল। ১২ ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে ছিল মাত্র ১টি ওয়ার্ডে। অবাঙালি ভোটের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে বড়বাজার, জোড়াসাঁকো, চৌরঙ্গি, ভবানীপুর এলাকা। এর মধ্যে ভবানীপুর নিয়ে বিজেপি আশাবাদী থাকলেও, উপনির্বাচনে এখানের সব ওয়ার্ডেই নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে তৃণমূল। ফলে নজরে থাকছে বড়বাজার এলাকা।
আবার ভবানীপুর হল মিনি ইন্ডিয়া। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আটটি ওয়ার্ড জুড়ে থাকেন একাধিক ভাষার মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে থাকেন এখানে। আর এই ভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, আসল চ্যালেঞ্জ ২০২৪। ফলে ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচন থেকেই মানুষের মন বুঝে নিয়েছিল তৃণমূল। এবার পুরসভা ভোটের আগে নাগরিকদের কাছে বা ‘মিনি ইন্ডিয়া’র কাছে আরেক বার বার্তা পৌঁছে দেবে তৃণমূল।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমে ভবানীপুর ও নন্দীগ্রাম উভয় কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে শুধু নন্দীগ্রামে প্রার্থী হন তিনি। তাঁর জায়গায় ভবানীপুর থেকে তৃণমূল দাঁড় করায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। শোভনদেব পান মোট ৭৩ হাজার ৫০৫ ভোট। বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষের ঝুলিতে যায় ৪৪,৭৮৬ ভোট। শোভনবাবু রুদ্রনীলকে হারান প্রায় ২৮ হাজারের কাছাকাছি ভোটে। তৃণমূল এখানে পায় ৫৭.৭১ শতাংশ ভোট। বিজেপি পায় ৩৫.১৬ শতাংশ ভোট।
আবার, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। দক্ষিণ কলকাতায় লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হন মালা রায়। ভবানীপুরে কড়া টক্কর দেয় বিজেপি। বাম ও কংগ্রেস জোট ১৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপির ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ৩ হাজার ১৬৮। তবে পুরসভার ওয়ার্ড বিচারে তৃণমূলের নজরে ৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড। যেখানে বহু গুজরাতি ভোটার রয়েছেন। ‘মিনি ইন্ডিয়ার’ ভোট থেকে তাই শুরু হয়ে যাচ্ছে আগামী লোকসভার মাপকাঠি বুঝে নেওয়া।