পুরভোটের আগে বিজেপির ডামাডোল অবস্থা, বৈঠকে বিরক্ত প্রকাশ অমিত মালব্যর
কলকাতা পুরভোটের (KMC Election) বাকি আর মাত্র ১০ দিন। এই সময় তৃণমূল (TMC) প্রার্থীদের প্রচার ও জনসংযোগ যখন শেষপর্যায়ে, তখনও লড়াইয়ের ময়দানে দেখা নেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির (BJP)। তুলনায় কিছুটা হলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস প্রার্থীদের।
একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকে গোটা রাজ্যের মতো কলকাতার বুকেও ক্রমশ ভঙ্গুর হয়েছে বিজেপির সংগঠন। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে মিটিং-মিছিল তো দূরের কথা, দেওয়াল লেখার, পোস্টার মারার লোক পাচ্ছে বা গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীরা।
মহিলা প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারে স্বামী-পুত্র আর পুরুষ প্রার্থীদের পাশে হাতে গোনা কিছু পরিচিত লোক। এমন অভিযোগ করে ইতিমধ্যেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মুমতাজ আলী। দলের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, মনোনয়ন দেওয়া ও স্কুটিনির সময় একজন বিজেপি কর্মীও তাঁর পাশে ছিল না। জেলা ও রাজ্য নেতারা তাঁর ফোন ধরেননি। অগত্যা তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। এবং তারপরও কেউ যোগাযোগ করেনি। একই অভিযোগ, ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সদানন্দ প্রসাদেরও। তিনিও পাশে কাউকে না পেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে আবার বিজেপি প্রার্থী রাজঋষি লাহিড়ীর বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রয়াত তিস্তা বিশ্বাসের স্বামী গৌরব বিশ্বাস। সবমিলিয়ে পুরভোটের আগে বিজেপিতে ডামাডোল পরিস্থিতি।
এদিকে, কলকাতা পুরভোটের আগে গতকাল, সোমবার ICCR-এ রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি আইটি সেলের (IT Cell) প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya)। বিজেপির এনন ছন্নছাড়া দশা দেখে রীতিমতো বিরক্ত প্রকাশ করে অমিত মালব্য বলেন, “আপনারা তো লড়াইয়ের আগেই হেরে বসে আছেন”। অমিত মালব্য নিজে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পেরে রাজ্য নেতাদের কর্মীদের পাশে থাকার নির্দেশ দেন তিনি এবং ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে বুথ এজেন্টদের তালিকা জমা দিতেও বলেন তিনি। যাতে অন্তত মুখরক্ষাটুকু হয়।
অন্যদিকে, কলকাতায় দলের বেহাল সংগঠন দেখে লোকের ঘাটতি মেটাতে অন্য জেলা থেকে ভাড়া করে লোক আনার নিদান দিয়েছেন গেরুয়া নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, হুগলি, হাওড়া, নদীয়া, ঝাড়গ্রাম সহ একাধিক জেলা থেকে এই কর্মীদের কলকাতায় নিয়ে আসছে বিজেপি। এক্ষেত্রে দলের যুব ও মহিলা শাখাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির দুর্বলতা ঢাকতে একুশের বিধানসভা ভোটে ভিন রাজ্য থেকে শয়ে শয়ে নেতাদের এনেও বিরাট বিপর্যয়ের সন্মুখীন হয়েছিল বিজেপি। যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে টাকা পয়সা নয়-ছয় থেকে মহিলা ঘটিত কেলেঙ্কারির মতো অভিযোগ রাজ্য নেতাদের মুখে শোনা গিয়েছিল। এবার পুরভোটের আগেও রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে দলের অন্দরেই।