আজ ৭৭ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের টাকা
৭৭ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে চলেছে কৃষকবন্ধুর টাকা। আজ, বুধবার মালদর প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তার সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর জন্য ২২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এক শীর্ষকর্তা বলেন, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর সব ব্যবস্থাই পাকা। মুখ্যমন্ত্রী সূচনা করলেই সরাসরি ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা ঢুকতে শুরু করবে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে।
কৃষিকাজে আর্থিক সাহায্য করতেই এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক একর জমি থাকলে বছরে ১০ হাজার এবং তার কম জমি থাকলে সংশ্লিষ্ট কৃষককে চার হাজার টাকা দেওয়া হয়। বছরে দু’টি কিস্তিতে টাকা পান কৃষকরা। এবার দেওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। দেখা যাচ্ছে, এই প্রকল্পে সব থেকে বেশি সংখ্যক কৃষক টাকা পাবেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। এই জেলায় উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। আট লক্ষ কৃষক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলার ৬ লক্ষ ২৯ হাজার চাষি কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পেতে চলেছেন। এরপরেই রয়েছে মুর্শিদাবাদ (৬ লক্ষ ২৩ হাজার)।
কৃষকবন্ধু প্রকল্পে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লক। সব থেকে কম উপভোক্তা রয়েছে ঠাকুরপুকুর-মহেশতলা ব্লকে। এটিও এই জেলার অধীনে। জেলার এক আধিকারিক বলেন, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা যেমন আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, দার্জিলিংয়ে যত কৃষক এই টাকা পাবেন, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক কৃষক এই সাহায্য পাবেন পাথরপ্রতিমায়। এবার এই ব্লক থেকে ৬০ হাজারের মতো কৃষক এই টাকা পেতে চলেছেন। এই বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন কৃষিপ্রধান জেলায় ভালো রকম ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। কতজন লাভের মুখ দেখেছেন, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্য কৃষকদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফসল নষ্ট কিংবা চাষ করতে না পারার কারণে যে লোকসান হয়েছে, তাতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সুবিধা প্রাপকের সংখ্যা রাজ্যে বেড়েই চলেছে। প্রকল্প চালু হওয়ার সময় সুবিধা প্রাপকের সংখ্যা ৫০ লক্ষের আশপাশে ছিল। শুধু জমির মালিক নয়, ভাগচাষিরাও এই প্রকল্পে আর্থিক অনুদান পান। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের কিষান নিধি প্রকল্পে শুধু জমির মালিককে বছরে তিন কিস্তিতে মোট ছ’হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। কয়েকটি নির্দিষ্ট শ্রেণির জমির মালিকরা অবশ্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাহায্য পান না। এক্ষেত্রে কোনও বাছবিচার করেনি রাজ্য। তারা সব অংশের কৃষককেই এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসেছে। গত আগস্ট মাসে রাজ্যের ৩৫ লক্ষ কৃষক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ পেয়েছেন। নাম নথিভুক্ত হলেও রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা আসেনি।