দেশ বিভাগে ফিরে যান

রাওয়াতের মৃত্যুর নেপথ্যে কি অন্তর্ঘাত! জল্পনা তুঙ্গে

December 10, 2021 | 2 min read

অন্তর্ঘাত নয় তো? এই প্রশ্নই দিনভর ঘুরপাক খেল সর্বত্র। সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে তামিলনাড়ুর সুলুর এয়ার বেস থেকে টেক অফ করেছিল এমআই ১৭ ভি ফাইভ হেলিকপ্টার। ওয়েলিংটনে ল্যান্ড করার কথা ছিল ১২টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু ঠিক ১২টা ৮ মিনিটে সুলুর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে হেলিকপ্টারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই কুন্নুর এলাকায় গ্রামবাসীরা লক্ষ করেন, চা বাগানের মধ্যে থেকে আগুনের শিখা আর কালো ধোঁয়া উড়ছে। ছুটে যান তাঁরা। দেখতে পান ভেঙে পড়া কপ্টার। তখনও জ্বলছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৃহস্পতিবার সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানালেন, বুধবার নীলগিরি পাবর্ত্য জোনের আকাশ থেকে ভেঙে পড়া এয়ারফোর্সের সেই ট্রান্সপোর্ট চপারের দুর্ঘটনার বিবরণ। আরও বললেন, এয়ারফোর্স, সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবারই তদন্ত কমিটি পৌঁছেছে কুন্নুরে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিবৃতির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য অংশ হল, ১২টা ৮ মিনিটে চপারের সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া। ঠিক এই অংশ থেকেই প্রশ্ন উঠছে একঝাঁক। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঠিক কতক্ষণ পর কপ্টার ভেঙে পড়ে? প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, অত্যধিক কুয়াশার কারণে নেভিগেশনের সমস্যা হয়েছে। কিন্তু অতটা যে কুয়াশা আছে, অথবা আবহাওয়া স্বাভাবিক নয়, তা আগে কেন জানা গেল না? কোনও ‘মে ডে কল’ কি ছিল? নিয়ন্ত্রণ হারানো যে কোনও ফ্লাইটের শেষ রেসকিউ আবেদনকেই ‘মে ডে কল’ বলা হয়। অন্যদিকে কোয়েম্বাটুর এয়ার বেস থেকে নাকি রেডার ট্র্যাকিং করাই হয়নি! কারণ কপ্টার ছিল লো অল্টিচিউডে। বৃহস্পতিবার ওই ক্র্যাশ হওয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভেঙে পড়া কপ্টারের মধ্যে থাকা ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। পাওয়া গিয়েছে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। সামগ্রিক ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষাও শুরু হয়েছে। ক্র্যাশ হওয়ার প্রাক-মুহূর্তে কপ্টার চালকের কী মেসেজ ছিল? এসব জানা যাবে এই দুই রেকর্ডার থেকে। বিজেপি এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেছেন, গোটা ব্যাপারটা খুব সন্দেহজনক। একে সাধারণ দুর্ঘটনা বলে মেনে নেওয়া কঠিন। তাই সার্ভিস ইনভেস্টিগেশনের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে আলাদা তদন্ত করানো দরকার। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে কে গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন, ‘নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদি ঘটনার সঠিক তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া যায়, তাহলে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বই জোরালো হবে। শত্রুর অভাব নেই। এত বড় মাপের একজন ব্যক্তি কপ্টারে যাচ্ছেন… নিরাপত্তায় কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সেটাও তদন্ত স্বাপেক্ষ।’রাজনাথ সিং যখন সংসদের দুই কক্ষে জেনারেল বিপিন রাওয়াত সহ ১৩ জন হতভাগ্য কপ্টারযাত্রীর মৃত্যু সংক্রান্ত সরকারি বিবৃতি দিয়েছেন, তখন কেন সংসদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না? এই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর অবশ্যই থাকা উচিত ছিল। এটা দৃষ্টিকটু। মোদি অবশ্য এদিন রাতে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছে যান। তখন সেখানেই এসে পৌঁছেছে নিহতদের ১৩টি কফিন। শ্রদ্ধা ও শোকজ্ঞাপন করেন তিনি। কপ্টার ক্র্যাশ নিয়ে ঘনীভূত রহস্যের মধ্যেই। সঙ্গে আরও জল্পনা… পরবর্তী ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ কে!

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Bipin Rawat, #sabotage

আরো দেখুন