রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বর্ধমানে জায়ান্ট স্ক্রিনে মোদীর লাইভ অনুষ্ঠান, প্রায় শূণ্য বিজেপি কর্মীদের জমায়েত

December 14, 2021 | 2 min read

বিজেপির জনশূন্য জমায়েত, প্রতিকী ছবি

সোমবার উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্পের উদ্বোধন করলেও বর্ধমানের ১০৮মন্দিরে ছিল সাজসাজ রব। কারণ ১০৮মন্দিরেই ‘দিব্য কাশী, ভব্য কাশী’ কার্যক্রম পালনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিজেপি। আয়োজনেও কোনওরকম খামতি ছিল না। মোদীর অনুষ্ঠান লাইভ দেখানোর জন্য লাগানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিনও। যদিও এত তোড়জোড় কাদের জন্য তা অবশ্য অনেকেরই বোধগম্য হল না। কারণ স্ক্রিনের সামনে গুটিকয়েক নেতাকর্মী ছাড়া কাউকেই দেখা গেল না। এমনকী অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতা হাজির হলেও কর্মীদের জমায়েত দেখা গেল না।

উত্তরপ্রদেশে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের সাফল্য হিসেবে করিডর উদ্বোধনের সাফল্য এরাজ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করে গেরুয়া শিবিরের নেতারা নিজেদের সংগঠন চাঙ্গা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এই বিকাশের বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রয়াস বর্ধমানে কতটা ফলপ্রসূ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, স্বয়ং বিরোধী দলনেতা যে অনুষ্ঠানে হাজির হলেন, সেখানেই একশো নেতা-কর্মীরা ভিড় জমালেন না। শিবলিঙ্গে জল ঢেলে, পুজো দেওয়ার পর মোদীর অনুষ্ঠান যখন জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে, তখন নেতাদের সংখ্যা আরও কমতে থাকে। এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা সদরের সভাপতি অভিজিৎ তা, প্রাক্তন সভাপতি সন্দীপ নন্দী সহ অন্যান্যরা। বিজেপির জেলা সদর সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, আমাদের কর্মসূচি বেশ সফল হয়েছে। শুভেন্দুবাবু এসে ১০৮ মন্দিরে পুজো দিলেন, তারপর আমরা বেশ কয়েকজন ওঁর সঙ্গে বসে জায়ান্ট স্ক্রিনে কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখলাম। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যও শুনলাম। অন্যদিকে একই কর্মসূচিতে এদিন কালনার সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য।

রাজনৈতিক মহলের মতে, দেশীয় রাজনীতিতে নিজেদের গড় ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি এখন প্রকল্প শেষের আগেই উদ্বোধন করে দিচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি চালুর আগে যত বেশি সম্ভব প্রকল্পের উদ্বোধন করে পালে হাওয়া টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রচারে তুলে আনার চেষ্টা করছে সবকা সাথ, সবকা বিকাশের তত্ত্ব। এদিন এই করিডর উদ্বোধনেও সেই দৃশ্য দেখলেন দেশবাসী। কিন্তু সুদূর উত্তরপ্রদেশে প্রকল্পের উদ্বোধন হলেও বাংলায় বিজেপির এত তোড়জোড় কেন‌! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনেই এরাজ্যে পুরভোট রয়েছে।

তাই ভোটের আগে এই কর্মসূচি পালন করে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করাই ছিল গেরুয়া শিবিরের মূল লক্ষ্য। যদিও বর্ধমানে এদিনের কর্মসূচিতে রাজ্য নেতার উপস্থিতিতেও কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ তো দূরের কথা, দেখাও পাওয়া যায়নি।বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, বিধানসভা ভোটের ভরাডুবির পর বর্ধমানে দলীয় নেতাদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। সেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই বারবার একাধিক কর্মসূচিতে বর্ধমানে আসছে রাজ্য নেতৃত্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এত কর্মসূচির পর তাও কোন্দল মিটছে কোথায়? নেতাদের কথা শুনে অধিকাংশ কর্মীই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন না। এদিনও সেই ছবি উঠে এল বর্ধমানের ১০৮ শিব মন্দিরে। পুরভোটের আগে কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধনের ঢাক পেটানোর চেষ্টা হলেও তার আওয়াজ কতদূর পৌঁছল, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #bjp, #Burdwan

আরো দেখুন