গণপিটুনিতে হতাহতের কোনও তথ্যই নেই মোদী সরকারের কাছে!
এ যেন কৃষক মৃত্যু নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলার পুনরাবৃত্তি। দেশে গণপিটুনিতে মৃত্যু নিয়ে কার্যত হাত ধুয়ে ফেলল মোদী সরকার। বুধবার সংসদে সরকারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, গণপিটুনি, উন্মত্ত জনতা বা নীতি পুলিসের দাদাগিরিতে হতাহতের কোনও তথ্য নেই। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ঘাড়ে বল ঠেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধ দমন, আটক, মামলা রুজু করা এবং তদন্তের দায়িত্ব তাদেরই।
গণপিটুনি, নীতি পুলিসের দাদাগিরিতে দেশে মৃত্যু, জখমের পরিসংখ্যান এবং তা রোধে সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাব দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্যকে ঢাল করে নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি, বিশেষ এবং স্থানীয় আইন মতে বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য এনসিআরবি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির থেকে সংগ্রহ করে তা প্রকাশ করে। কিন্তু, গণপিটুনি, উন্মত্ত জনতা বা নীতি পুলিসের হাতে মৃত্যু বা জখমের কোনও পৃথক তথ্যভাণ্ডার এনসিআরবি রাখে না।’
এরপরেই গণপিটুনি রোধে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা উল্লেখ করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। পাশাপাশি ভুয়ো খবর ও জল্পনা রোধে পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গণপিটুনির মতো হিংসা রুখতে ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই এবং ২৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছিল।’ একইসঙ্গে, গণপিটুনি নিয়ে রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। নিত্যানন্দ রাইয়ের কথায়, দেশের সংবিধানের সপ্তম তফসিল অনুযায়ী, অপরাধ দমন, আটক, মামলা দায়ের এবং সংশ্লিষ্ট এজেন্সি দিয়ে তদন্তের দায়িত্ব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিই।
তিন কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ১৫ মাস ধরে চলা বিক্ষোভে দেশজুড়ে প্রায় ৭০০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কিন্তু সম্প্রতি মোদী সরকার তা নাকচ করে জানিয়ে দেয়, কৃষক মৃত্যু নিয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। সেই একই ধাঁচে গণপিটুনিতে মৃত্যু নিয়েও দায় ঝেড়ে ফেলার কৌশল নিয়েছে কেন্দ্র। কারণ সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট, গণপিটুনির জেরে মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনাই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে।