টাকা পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র, মজুরি পাচ্ছে না ১০০ দিনের শ্রমিকরা
কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না পাঠানোয় ১০০ দিনের কাজ করার পর তিন মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও মজুরি পাচ্ছেন না দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার লক্ষাধিক শ্রমিক। এনিয়ে জেলাজুড়ে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় ধরে ১০০ দিনের কাজের মজুরি মিলছে না। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলায় প্রায় ২৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ফলে কাজ করে অনেকে টাকা না পেয়ে হতাশায় ভিন রাজ্যে অন্য কাজের খোঁজে ছুটেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় বেশি কাজ হয়েছে। ফলে প্রচুর গরিব মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছেন। তবে সেই কাজ করার পর তিন মাস কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মজুরির টাকা ঢোকেনি। এনিয়ে তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা পুরোটাই কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়। এখানে জেলা প্রশাসনের কোনও ব্যাপার নেই। আমরা জেলা প্রশাসন থেকে তথ্য পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। সেই তথ্য অনুযায়ী শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। তবে কেন্দ্র থেকে টাকা না পাঠানো হলে আমাদের কিছু করার নেই।
কৃষি বিপণনমন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, বিজেপি মুখে শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পের সুবিধা প্রত্যেক মানুষের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। তবে ১০০ দিনের কাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের টাকা কীভাবে সাধরণ মানুষকে না দিয়ে বঞ্চনা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এনিয়ে আমরা জোরদার আন্দোলন চালাচ্ছি। আমরা সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি। বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। সমস্ত বিষয় খোঁজখবর না নিয়ে কিছু বলতে পারব না। এমনটা হয়ে থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে কথা বলব।
লকডাউনের পরে যাতে ভিনরাজ্যে শ্রমিকরা কাজে না যান, সেদিকে নজর দিয়ে একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেছে প্রশাসন। যাতে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে পর্যাপ্ত কর্মদিবস তৈরি হয়, সেদিকে জেলা প্রশাসন নজর দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য কাজের দিকে ঝুঁকছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শ্রমিকরা। শ্রমিকের কাজ না করে বাড়তি টাকা লাভের আশায় সরকারের ১০০ দিনের কাজ করেন অনেকে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস কেটে গেলেও কাজ করেও কোনও টাকা মিলছে না শ্রমিকদের। অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে কি না, সেই আশায় রোজ ব্যাঙ্কে গিয়ে তাঁরা খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
জেলার প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক তিন মাস ধরে মজুরির টাকা না পেয়ে ১০০ দিনের কাজের প্রতি উৎসাহ হারাতে বসেছেন। জেলাজুড়ে মোট ২৫ কোটি টাকা মজুরি বকেয়া পড়েছে। যা কেন্দ্রীয় সরকার এখনও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠায়নি। ফলে গরিব মানুষ কাজ করেও টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন। মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে, অনেক শ্রমিকেরই অল্প পরিমাণ জমি রয়েছে। তাঁরা সেখানে চাষাবাদ করেন। বর্তমানে আলুর বীজ বপনের সময় চলছে। এসময় চাষিদের আলু বীজ, সার কেনা বাবদ নগদ টাকার প্রয়োজন হয়। তাই এ সময়ে ১০০ দিনের কাজের মজুরির টাকা পাওয়া গেলে অনেকেরই সুবিধা হতো।