উৎকর্ষ বাংলা: প্রশিক্ষিতদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি ইউনিটের ঘোষণা হলদিয়ায়
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2021/12/IMG-20211217-WA0086-1024x493.jpg)
উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে ছোট-বড় শিল্প কারখানাগুলিতে প্রশিক্ষিতদের কর্মসংস্থানের জন্য হলদিয়ায় একটি ইউনিট চালু করার কথা ঘোষণা করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এই ইউনিটের মাধ্যমে এক জানালা পদ্ধতিতে শিল্পশহরে বেকারদের কাজের সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি দক্ষ কর্মপ্রার্থীদের কাজের সুযোগ তৈরির জন্য তিনমাস অন্তর বিভিন্ন শিল্প সংস্থার আধিকারিকদের নিয়ে মতবিনিময় বৈঠক করবে জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে হলদিয়ার শিল্প-কারখানাগুলিতে শ্রমিক সমস্যা মেটাতে প্রশাসনিক কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মিটিং করবে। বৃহস্পতিবার হলদিয়ার দুর্গাচকে কুমারচন্দ্র জানা অডিটরিয়ামে শিল্পসংস্থা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন স্থানীয় প্রশিক্ষিত যুবকদের কারখানায় নিয়োগের বিষয়ে হলদিয়ার শিল্পসংস্থাগুলিকে মানবিক হওয়ার আবেদন জানায় প্রশাসন। শিল্প সংস্থাগুলির অভিযোগ, লাগাতার শ্রমিক সমস্যা, জমি জটিলতা সহ একাধিক বিষয়ে সাহায্যের আবেদন করেও ফল মিলছে না।
এদিনের সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, পুলিস সুপার অমরনাথ কে, হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডল, হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার হরিশঙ্কর পানিক্কর প্রমুখ। অন্যদিকে, শিল্পসংস্থাগুলির তরফে আইওসি রিফাইনারি, পেট্রকেম, এক্সাইড সহ প্রায় ৫০টির বড় ও ছোট শিল্প সংস্থার প্রতিনিধি ও উদ্যোগপতি, ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
মন্ত্রী সৌমেনবাবু বলেন, সমন্বয় সভার মূল লক্ষ্য হল, কীভাবে সরকার শিল্পসংস্থা ও ছোট বড় উদ্যোগপতিদের পাশে দাঁড়াবে সেই বিষয়টি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া। ২০১১ সালের আগে শিল্প সংস্থাগুলিকে কারখানা তৈরির জন্য অনুমতি আদায় করতে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়তে গিয়েই দু’বছর কেটে যেত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এক জানালা পদ্ধতি ব্যবহার করে রাজ্যে শিল্প স্থাপন সহজ করেছেন। মন্ত্রী শিল্প সংস্থার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, উৎকর্ষ বাংলার মাধ্যমে মূলত গরিব, তফসিলি ও নিম্নবিত্ত যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করছে রাজ্য সরকার। শিল্পসংস্থাগুলিকে তাঁদের কাজে লাগানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী সৌমেনবাবু।
জেলাশাসক বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উৎকর্ষ বাংলার প্রশিক্ষিতদের নিয়োগের উপর জোর দেন। তিনি উদ্যোগপতিদের জেলায় সামুদ্রিক ও মিষ্টিজলের মাছ সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ, চিলিং প্ল্যান্ট, ফিশফিড তৈরির জন্য কারখানা গড়তে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। জেলায় মাছ ও কৃষি ক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগের এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। এজন্য নাবার্ডের কাছে প্রকল্প তৈরি করে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, জেলায় উৎকর্ষ বাংলার মাধ্যমে ৩০ হাজার ছেলেমেয়েকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এদের নিয়োগের বিষয়ে একটু মানবিক হতে হবে শিল্পসংস্থাগুলিকে।
একাধিক শিল্পসংস্থার আধিকারিক কারখানার শ্রমিক সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেন। ইন্দোরামা সার কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের জন্য তাঁদের তিন মাস ধরে উৎপাদন অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে একমাত্র আমরাই সার উৎপাদন করি। কারখানায় প্রতিদিন ৩২০০ টন সার উৎপাদন হতো, এখন তা কমে ১৮০০ টনে নেমেছে। ফলে রাজ্যে সারের জোগান কমতে থাকায় সমস্যা হচ্ছে। একাধিক শিল্পসংস্থা জানায়, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ফয়সালা না হওয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ বাড়ছে।