গোবর, গঙ্গাজল দিয়ে সিঙ্গুরে বিজেপি-র ধর্না মঞ্চ শুদ্ধ করল তৃণমূল
সিঙ্গুরে যে জমিতে বিজেপির ধরনা মঞ্চ গড়া হয়েছিল, শুক্রবার তৃণমূল সেখানে শুদ্ধিকরণ অভিযান চালাল। গোবরজল ও গঙ্গাজল ছিটিয়ে গোটা এলাকা শুদ্ধ করল তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষা কমিটি। ঝুলিয়ে দেওয়া হল ২১টি লেবু, ২১টি লঙ্কা। মহিলারা ওই চত্বর ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কারও করলেন। উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না, হরিপালের বিধায়ক করবি মান্না এবং তৃণমূলের অনেক জনপ্রতিনিধি।
সিঙ্গুরের সিংহের ভেড়িতে বিজেপির কিসান মোর্চা গত তিন দিন ধরে ধরনা চালায়। প্রথম দু’দিন ওই ধরনা ফ্লপ শোয়ের চেহারা নিয়েছিল। যদিও বিজেপির অধিকাংশ রাজ্য নেতা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ বা স্থানীয় কৃষকদের দেখা মেলেনি। বৃহস্পতিবার ধরনার শেষ দিনে অবশ্য কিছু লোক জড়ো করা হয়। নন্দীগ্রাম থেকে গোটা ২০ বাসে হাজার খানেক লোক আনা হয়েছিল।
শুক্রবার সকালেই সিঙ্গুরের গোপালনগর, বেরাবেরি, খাসের ভেড়ি, সিংহের ভেড়ি, দলুইগাছা, বাজেমেলিয়া প্রভৃতি গ্রাম থেকে তৃণমূলের প্রচুর মহিলা সমর্থক গোবরজল, গঙ্গাজল ও ঝাঁটা নিয়ে হাজির হন বিজেপির ধরনা মঞ্চের সামনে। চলে শুদ্ধিকরণের কাজ।
সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বেচারাম মান্না বলেন, ‘সারা দেশে কৃষকদের প্রতি চূড়ান্ত বঞ্চনা করেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের গাড়িতে পিষে মারা হয়েছে, কৃষক আন্দোলনের চাপে কেন্দ্র কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে। এখন রাজ্যের বিজেপি নেতারা সিঙ্গুরে এসে কৃষক প্রেম দেখাচ্ছেন। সিঙ্গুর হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলনের পীঠস্থান। সেই পবিত্র মাটিতে বিজেপির অপবিত্র ছায়া পড়েছে। তাই এই শুদ্ধিকরণ।’
এই অভিযানে সামিল গোপাল নগরের কৃষক রমণী তারকবালা কোলে বলেন, ‘সিপিএম আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছিল। মমতাদি সেই জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন বিজেপি কৃষকদরদী সাজতে চাইছে।’
বিজেপি হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আর কত নাটক করবে তৃণমূল ? একটা রাজনৈতিক দল কর্মসূচি করলে সেই জায়গা শুদ্ধ করতে হবে ? আসলে তৃণমূল সিঙ্গুরের কৃষকদের নিয়ে রাজনীতি করছে। বিজেপি কৃষক বিরোধী নয়।’