কলকাতার কোনও প্রার্থী নিজের এলাকা ছেড়ে বেরোবেন না, নির্দেশ তৃণমূলের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে উৎসবের মেজাজে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা পুরসভার ভোটে নেমে পড়ল তৃণমূল। তার মধ্যেই দলের বার্তা মেনে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা ফিরে গেলেন যাঁর যাঁর এলাকায়। একইসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশ, কলকাতার কোনও প্রার্থী নিজের এলাকা ছেড়ে বেরোবেন না। সেই কথা মেনে আজ সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে ঘাঁটি গাড়ছেন নেতৃত্ব থেকে প্রার্থী প্রত্যেকে।
১৪৪ আসনের মধ্যে ১৩৫ আসন জেতার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জানিয়েছে, ভোটও বাড়বে ৯৫ শতাংশের উপর। এই আত্মবিশ্বাস রেখেই আজ ভোটে নামছে তৃণমূল। সকাল সকালই নিজেদের ভোটদান পর্ব সেরে ফেলবেন নেতৃত্বের সিংহভাগ। তবে দিনের ছবিটা কেমন হয় দেখে বিকেলে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দিতে যাবেন তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরের পর ভোট দেওয়ার কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এমনিতে রবিবার। ভোটে অফিস-কাছারি কামাইয়ের বালাই নেই। তৃণমূল নেতৃত্বও শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু ওয়ার্ডে গোলমাল হতে পারে বলে পুলিশ প্রশাসনকে আগে থেকেই সতর্ক করে রেখেছে তৃণমূল। দলের সমীক্ষা অনুযায়ী সেইসব ওয়ার্ডে কর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
প্রচারে হেভিওয়েট নেতা বা মন্ত্রীদের দেখা গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ব্রাত্য বসু, মদন মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একাধিক নেতা ছিলেন। ছিলেন বিধায়ক লাভলী মৈত্রর মতো টেলিউডের অনেক পরিচিত তারকারা। প্রচার শেষে তাঁদেরও যাঁর যাঁর এলাকায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবারই তাঁরা যে যাঁর এলাকায় ফিরে গিয়েছেন। কলকাতা পুরসভার মতো গৌরব ও ঐতিহ্যের সংস্থার ভোটে কোনওরকম অশান্তি চায় না তৃণমূল। সে কথা মাথায় রেখেই কলকাতার বাইরের কোনও নেতাকেই এই ভোটে থাকার অনুমতি দেয়নি তৃণমূল।
শাসকদলের নেতৃত্ব এর মধ্যেই প্রার্থীদের জানিয়েছে, ওয়ার্ডের বাইরে নয়। কোনওভাবে বহিরাগতদের যেমন বরদাস্ত করা হবে না। তেমনই কোনও প্রার্থী তাঁর নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের বাইরে যাবেন, তাও হবে না। সেই অনুযায়ী দলীয় কার্যালয়ের বাইরে ইতিমধ্যে শিবির তৈরি। সেখানেই দলীয় কর্মীদের নিয়ে থাকবেন প্রার্থীরা। বুথের কাছাকাছি কোথাও থাকার নিয়ম নেই। তাই কমিশনের কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রত্যেকে। কোথায় কত শতাংশ ভোট পড়ল, কোথাও ভোট দেরিতে পড়ছে কিনা, তার খবর নেওয়া চলবে শিবিরে বসেই। এজেন্টরাও তৈরি থাকছেন সময় ধরে ধরে পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর সংগ্রহের জন্য।
উৎসবের মেজাজে যেমন প্রচার শেষ করেছে তৃণমূল, তেমনই উৎসবের মেজাজে ভোট করার উদ্যোগ নিয়েছে। এমনিতেই শহরাঞ্চলে ভোটের শতাংশ কম হয়। ফলে তার গতি বাড়িয়ে শতাংশ বাড়ানোর জন্য পার্ট ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কর্মীদের উপর। তার মধ্যেই কোথাও কোনও গোলমালের সম্ভাবনা থাকলে, তাও দ্রুত মেটানোর কথা জানানো হয়েছে। আরও জানানো হয়েছে ইভিএমে কোনও সমস্যা থাকলে, তা দ্রুত কমিশনকে জানাতে হবে। আবার ইভিএম পুনরায় সুস্থমতো চালু না হওয়া পর্যন্ত এলাকা ছাড়া চলবে না।