ভারতীয়দের ডিএনএ নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য মোহন ভাগবতের
ভারতীয়দের ডিএনএ নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর দাবি, ‘৪০ হাজার বছর ধরে ভারতের সব মানুষের ডিএনএ এক। আজকের মানুষের ডিএনএ সেদিনের মানুষের মতোই। আমাদের সকলের পূর্বপুরুষ এক। তাঁদের কর্মফলে আমাদের দেশ সমৃদ্ধ হয়েছে। সংস্কৃতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।’ তাঁর এই মন্তব্যের পরেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। সব মানুষের ডিএনএ কীভাবে এক হয় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। তাঁদের প্রশ্ন, তবে কি বিজ্ঞানের উল্টোপথে হাঁটতে চাইছেন ভাগবত? নাকি, একথার অন্দরে অন্য কোনও অর্থ লুকিয়ে আছে। শুরু হয় চর্চা। ভাগবতের ডিএনএ মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি এ প্রসঙ্গে টেনে আনেন ‘হিন্দু’ ও ‘হিন্দুত্ববাদী’ বিতর্ক। টুইটারে তাঁর খোঁচা, ‘হিন্দুরা মনে করে প্রত্যেকের ডিএনএ পৃথক। আর হিন্দুত্ববাদীরা বিশ্বাস করে সব ভারতীয়দের ডিএনএ এক।’
আলোচনায় কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালনা নিয়েও নিজের অভিমত স্পষ্ট করেন সঙ্ঘপ্রধান। তিনি স্পষ্টই বলেন, সঙ্ঘের রিমোটে চলে না দিল্লি। তবে সরকারের মধ্যে সঙ্ঘের লোক রয়েছে। প্রসঙ্গত, বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই সরব হয়েছিল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সদর কার্যালয় নাগপুরের নির্দেশেই চলছে দিল্লি। সংবাদ মাধ্যমেও বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রের উপর সঙ্ঘের খবরদারির দাবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই অভিযোগ সোজা ব্যাটে উড়িয়ে দেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত।
সেনাকর্মীদের অনুষ্ঠানে ভাগবত বলেন, ‘সরকারের আলাদা এগজিকিউটিভ রয়েছে। নীতি আলাদা, কাজ করার পদ্ধতি পৃথক। যদিও সেখানে সঙ্ঘের ভাবনা ও সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে। সরকার পরিচালনার মূল ব্যক্তিরা সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত। আগামী দিনেও তাঁরা সঙ্ঘের মতাদর্শে চলবেন। সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘের সম্পর্ক এটুকুই। কিন্তু ডাইরেক্ট রিমোট কন্ট্রোলের কোনও ব্যাপার নেই।’ অনুষ্ঠানে ভাগবত সদ্য প্রয়াত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী ও ১২ সেনা কর্মী-আধিকারিকের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। ওই অনুষ্ঠানে সরকারের সঙ্গে নাগপুরের সম্পর্ক বলতে গিয়ে সঙ্ঘ প্রধান দাবি করেন, ‘অনেক পূর্বতন সরকার আমাদের বিপক্ষে ছিল। নানা বিরোধিতা উঠে এসেছে নানা সময়ে। ৯৬ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে সঙ্ঘ। বহু বাধা পেরিয়ে আজ এই অবস্থায় এসেছি আমরা। আজ আমাদের সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। তাঁরা সবসময় সক্রিয় রয়েছেন।’ তাঁর দাবি, প্রয়োজনে মানুষের পাশে বারবার দাঁড়িয়েছেন স্বয়ংসেবকরা। এর থেকে প্রমাণ হয় তাঁরা শুধু পার্লামেন্ট পরিচালনা করে না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেন।